Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:31 am

সিম সংকটের খবরে নিম্নমুখী গ্রামীণফোনের শেয়ারদর

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রামীণফোন সিম সংকটে পড়বে এমন খবরের জের ধরে কমেছে এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। গতকাল দিনের শুরুতে দর বাড়লেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারদর কমতে থাকে। দিন শেষে প্রতি শেয়ারের দর কমে পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা। দর স্থির হয় ২৬৮ টাকা ২০ পয়সায়।

গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, আমাদের হাতে কোনো সিম নেই। খুচরা বিক্রেতাদের হাতে কিছু সিম রয়েছে। সেগুলো শেষ হলে আর সিম পাওয়া যাবে না। সিম রিসাইকেলের জন্য বিটিআরসির অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সিম নষ্ট হলে রিপ্লেসমেন্টের জন্যও সিম পাওয়া যাবে না। সিম রিসাইকেলের জন্য এরই মধ্যে ৩০ লাখ সিম জমা আছে।

ইয়াসির আজমান বলেন, বাংলাদেশের আইন, মানুষ ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে গ্রামীণফোন। বাজারে প্রতিদিন গ্রামীণফোনের ৫০ হাজার সিমের চাহিদা আছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি নতুন সিমের অনুমতি না দিলে বাজারে সিম সংকটে পড়বে গ্রামীণফোন। তবে সরকারের বকেয়া পাওনা নিয়ে গ্রামীণফোনের সঙ্গে যে সংকট চলছে, তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে তার উন্নতি হবে।

এদিকে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্য আসায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার নিয়ে দোলাচলে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এই শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বাজারের সবচেয়ে বড় মূলধনি কোম্পানি হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার চলমান দ্বন্দ্বের কারণে কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা। ফলে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা-না করা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের, যে কারণে দীর্ঘদিন থেকে  গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে কোনো ভালো খবর এলে শেয়ারদর বাড়ছে, আবার নেতিবাচক খবর এলে দর কমে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা বিটিআরসি ও কোম্পানির চলমান দ্বন্দ্বের সমাধান আশা করেন।

উল্লেখ্য, বহুজাতিক এ প্রতিষ্ঠানটি ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এর পর থেকে প্রতি বছরই শেয়ারহোল্ডারদের সন্তোষজনক লভ্যাংশ দিতে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটিকে। ২০১৭ সালে এ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের ২০৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। পরের বছর তা বেড়ে হয় ২৮০ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোম্পানির পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ারের মধ্যে ৯০ শতাংশ রয়েছে পরিচালকদের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে চার দশমিক শূন্য দুই শতাংশ শেয়ার।  বাকি শেয়ারের মধ্যে বিদেশিদের কাছে তিন দশমিক ৯২ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে দুই দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ শেয়ার রয়েছে।