Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 3:04 am

সিরাজগঞ্জে কদর বেড়েছে তালের শাঁসের

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ: তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে। তালগাছ আকাশে উঁকি মেরে সূর্যের তাপ শোষণ করলেও কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায়, তা দেহের পানিশূন্যতা অনেকটাই পূরণ করে। ফলে জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে সিরাজগঞ্জে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। দিন ও রাতের এ খরতাপ থেকে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে রসাল তালের শাঁসের কদর বেড়েছে।

সিরাজগঞ্জ শহরসহ ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের রাস্তার দু’পাশে কচি তালের শাঁসের পশরা নিয়ে হাজির অনেকেই। তীব্র গরমে কদর বেড়েছে মৌসুমি রসাল ফল তালের শাঁসের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের বাজার স্টেশন রোড, কাঠেরপুর, বড় পুল, হাসপাতাল মোড়, বাসস্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড, হাটিকুমরুল গোল-চত্বর, নলকা মোড়, শিয়ালকোল বাজার, কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও কাজীপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন ও বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাটিকুমরুল গোল-চত্বর এলাকা থেকে তালের শাঁস কেনা ট্রাক ড্রাইভার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি নিতে ৩০ টাকায় দুটি তাল কিনলাম। এ গরমে শাঁস খেতে খুব ভালো লাগে। মাঝে মধ্যে কিনে বাড়িতেও নিয়ে যাই।’

কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট বাজার এলাকার সিএনজি চালক হানিফ শেখ বলেন, ‘রোদের তীব্রতা অনেক বেশি। যাত্রী নামিয়ে ৪টা তালের শাস খেলাম। অনেক ভালোই লাগছে। বাড়িতে ছোট ভাই-বোনেরা তালের শাঁস খেতে চায়। তাই ৫০ টাকায় ১০টি শাঁস কিনলাম।’

উপজেলার নলকা মোড় এলাকায় তালের শাঁস বিক্রেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘গরম পড়লে তালের শাঁস ভালো বিক্রি হয়। প্রতি বছর আমি এ মৌসুমে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি। প্রতিটি তালে ২-৩টি করে শাঁস থাকে। প্রতিটি শাঁস ৫ টাকা দরে বিক্রি করি। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫০০ শাঁস বিক্রি করা যায়।’

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদুল ইসলাম জানান, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে। এ শাঁসে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও পানি রয়েছে। সেই সঙ্গে আঁশ তো রয়েছেই।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর বলেন, এখন বজ্রপাত রোধে বিভিন্ন রাস্তার ধারে ও খালের পাড়ে তালগাছ রোপণ করা হচ্ছে। কৃষি অফিস ও বিভিন্ন সংগঠনের আলাদাভাবে তালের গাছ রোপণ করে আসছে। এ বছর তালের ফলনটাও ভালো হয়েছে। এছাড়া এবার নতুন নতুন গাছে তাল ধরছে। এসব গাছের তাল পাকানোর জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে বীজ করা যায়। পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও বলে তিনি জানান।