প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ: উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। জেলায় মোট আট লাখ ৮৬ হাজার ৩৪৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। একই সঙ্গে এক বছরের ব্যবধানে ধানের উৎপাদন বেড়েছে ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় জেলায় ধানের উৎপাদন বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। সোনালি ধানের মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে কৃষকের উঠান।
জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছে কৃষক। এ বছর জেলায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৪১ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে এক লাখ ৪০ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উফশী ২৮, ২৯, ৩৩, ৭৪ ও ৮১ জাতের এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ হেক্টর, হাইব্রিড এসিআই-১, ২, ৩ জাতের ১২ হাজার ৯৫০ হেক্টর ও সিনজেনটা (হিরা) ১, ২, ৩ ও ৪ জাতের দুই হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়।
রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রক্ষগাছা ইউনিয়নের দৈবজ্ঞগাঁতী গ্রামের ধানচাষি জয়নাল সেখ জানান, এবার ১২ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। গত বোরো মৌসুমে ৮বিঘা জমিতে ধান চাষ করে ছিলাম। এবার
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানও খুব ভালো হয়েছে। ধান কাটা প্রায় শেষ, বাজারে ভালো দাম পেলে লাভবান হতে পারব।
তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের মোকাদ্দেস ইসলাম আপন বলেন, এবার চার বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম। এর মধ্যে ব্রি-২৮ জাতের ধান ছিল দুই বিঘা। বাকি দুই বিঘা ২৯ জাতের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক আবু হানিফ বলেন, ইতোমধ্যে কৃষকরা জমির ৮০ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছে। বাকি ২০ ভাগ আগামী ১০ দিনের মধ্যে কাটা শেষ হবে। এবার ধান ঘরে তুলতে কৃষি বিভাগ নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে জেলার এক লাখ ৪০ হাজার ২১০ জনকে নানা ফসলের বীজ বিনা খরচে এবং নিয়মিতভাবে রোগ ও পোকার আক্রমণ সংক্রান্ত পূর্বাভাস জরিপ কাজে মাঠে ছিল কৃষি কর্মকর্তারা। এছাড়া জেলায় ২০৬ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক কৃষকের জমিতে ফসলের তদারকিসহ নানা পরামর্শ দিচ্ছেন।