শেয়ার বিজ ডেস্ক: সিরিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্ব নতুন করে হামলা চালালে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে বলে সতর্ক করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন। খবর রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্র যখন নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে রাশিয়ার ওপর চাপ জোরালো করতে চাইছে, ঠিক তখন রুশ প্রেসিডেন্ট এ হুশিয়ারি দিলেন। ফোনালাপে রুহানিও আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতা তৈরির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত শহরে রাসায়নিক হামলার অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে সিরিয়ার তিনটি স্থাপনা লক্ষ করে যৌথ হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ব্রিটেন। রাজধানী দামেস্ক ও হোমস শহরের ওই তিনটি স্থাপনায় আসাদ সরকার রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন করত বলে অভিযোগ করে আসছে এসব দেশ। স্থাপনাগুলো লক্ষ করে এরই মধ্যে শতাধিক মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। দামেস্কের একটি রাসায়নিক গবেষণাগার ধ্বংস হওয়ার কথা স্বীকার করেছে সিরিয়া। রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হামলা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চালানো এই হামলার জবাব দেওয়া হবে।
এ পরিস্থিতিতে রোববার টেলিফোনে কথা বলেন ভøাদিমির পুতিন ও হাসান রুহানি। ফোনালাপে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা অবৈধ হামলা সিরিয়া সংকটের রাজনৈতিক সমাধানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে বলে একমত হন দুই নেতা। এ সময় তারা হামলা-পরবর্তী সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফোনালাপে পুতিন বলেছেন, ‘যদি জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকে তাহলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা অনিবার্য হয়ে উঠবে।’
ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সিরিয়ার ওপর মার্কিন ও তার মিত্রদের আগ্রাসনের মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে, উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, যখন সিরিয়ার পূর্ব ঘৌতার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পরাজয় নিশ্চত হয়ে উঠেছে তখন যুক্তরাষ্ট্র এ হামলা করেছে।
প্রেসিডেন্ট রুহানিও আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি এ ধরনের আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে এবং তার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে কোনো মূল্য না দিতে হয়, তাহলে আমরা এ অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় নতুন অস্থিতিশীলতা দেখব।’
জাতিসংঘে নিয়োজিত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি এক সাক্ষাৎকারে জানান, যুক্তরাষ্ট্র নতুন অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেসব কোম্পানি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সম্ভাব্য রাসায়নিক অস্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করা হতে পারে।