শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, সিলেট: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে অংশ নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদে চা শ্রমিকদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আছি, তবে দাঁডাবো কি-না সেটা পরে দেখা যাবে। এ সময় আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কতভাগ আশাবাদী প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, শতভাগ আশাবাদী।
এর আগে নিজের বয়স বেড়ে যাওয়ার কথা বলে একাধিক অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বলেছিলেন ৮৪ বছর বয়সী এ মন্ত্রী। ছোট ভাই জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবুল মোমেনকে প্রার্থী হিসেবেও তিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন কয়েকটি অনুষ্ঠানে।
সদর ও সিটি করপোরেশনের একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোট ছাড়াই নির্বাচিত হন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
চা শ্রমিকদের হাতে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হচ্ছে নির্বাচন। কারণ নির্বাচনে জনগণ প্রার্থীদের শিক্ষা দিতে পারেন। প্রার্থীরা জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে নির্বাচনে তাকে প্রত্যাখ্যান করেন, আর ভালো কাজ করলে তাকে গ্রহণ করেন।”
গত আট বছর ধরে বর্তমান সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনারও একমাত্র লক্ষ্য জনকল্যাণ। শেখ হাসিনার এ অবদানের কথা আগামী নির্বাচনে মনে রেখে সাধারণ মানুষকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান মুহিত।
জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসন বিশেষ মর্যাদার বলে সমাদৃত। এ আসন নিয়ে গত প্রায় পাঁচটি নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে এক ধরনের মিথ প্রচলিত রয়েছে। এ আসনে যে দলের প্রার্থী জেতেন, সেই দলই ক্ষমতায় যায়। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন থেকে এমন মিথ প্রচলিত হওয়ার কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সিলেট-১ আসন বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ।
গত প্রায় দুই যুগে পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, ১৯৯১ সালে এ আসনে নির্বাচন করে বিএনপির প্রার্থী প্রয়াত খন্দকার আবদুল মালিক সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। ওই বছর সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত স্পিকার হুমায়–ন রশিদ চৌধুরী জিতেছিলেন। তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐকমত্যের সরকার গঠন হয়। ২০০১ সালে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান জয়ী হন। বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে। ওই নির্বাচনে প্রথম প্রার্থী হয়ে সাইফুরের সঙ্গে হেরেছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করে। ২০১৩ সালে অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন মুহিত।