নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে ছয়টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ডিপো কর্তৃপক্ষ পৃথক কমিটি গঠন করেছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কমিটিকে পাঁচ দিন, বন্দর কর্তৃপক্ষের কমিটিতে তিন দিন ও বাকি দুই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক শাহজাহান সিকদার জানান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে প্রধান ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিছুর রহমানকে সদস্য সচিব করে তাদের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে।
এ কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে ডিসি মো. মমিনুর রহমান বলেন, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলম।
তিনি জানান, কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত কমিশনার শফিউদ্দিনকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান, সালাহউদ্দিন রিজভী, সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা ও রাজস্ব কর্মকর্তা বিকাশ দাশ।
আর বন্দর কর্তৃপক্ষের তিন সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন টার্মিনাল ম্যানেজার, ডেপুটি ডাইরেক্টর ও কাস্টমস ডিসি। তাদের তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাজাহান সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বন্দর থেকে একটি তদন্ত কমিটি করেছি। অনিয়ম ছিল কি না, নিরাপত্তায় বা অগ্নিনির্বাপণে কোনো ঘাটতি ছিল কি না, তা তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে বলবে। বিস্ফোরণের কারণে আগুন ছড়িয়ে গেছে। শুরুতেই যদি সাহসিকতার সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তাহলে তা এত ব্যাপক হতো না।’
সীতাকুণ্ডে কদমরসুল এলাকায় ওই বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালে গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় আগুন লাগে। সেখানে রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে; দগ্ধ ও আহত দুই শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডিপোয় রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে বলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আনিছুর জানান।
