নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রামধ: চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ড এনবি শিপ ইয়ার্ডে লোহার আঘাতে মো. মনির (৩৮) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় সলিমপুর সাগর উপকূলে এনবি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মনির সলিমপুর গ্রামের মৃত মনছুর আহমেদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, এনবি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে কাজ করার সময় লোহার পাতের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন মনির। পরে ইয়ার্ডের অন্য শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শিপ ইয়ার্ডে লোহার আঘাতে মো. মনির নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মের সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী পুরোনো জাহাজের ডাম্পিংয়ের অন্যতম শীর্ষ গন্তব্য স্থান বাংলাদেশ। বিশ্বের মোট এক-তৃতীয়াংশ মেয়াদাত্তীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও দূষিত জাহাজগুলো হাত
বদল হয়ে সীতাকুণ্ডে জাহাজ ভাঙার ইয়ার্ডে যায় এবং বছরে দুই শতাধিক জাহাজ ভাঙা হয়।
জানা গেছে, গত এক মাসে সর্বোচ্চ পাঁচ শ্রমিক মারা যান। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠান খাজা শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে তসলিম নামের ৩৬ বছর বয়সী এক শ্রমিক লোহার প্লেটের আঘাতে নিহত হন। একইভাবে জাহাজ ভাঙা ব্যবসায়ী শওকত আলী চৌধুরীর মালিকানাধীন এসএন করপোরেশনে হবিগঞ্জের লিটন পাল নামের ২৮ বছরের শ্রমিক গত ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান।
এছাড়া গত ১৪ সেপ্টেম্বর মিডল্যান্ড ব্যাংকের পরিচালক মাস্টার আবুল কাশেমের মালিকানাধীন মাদার স্টিল লিমিটেডে সিলিন্ডার ব্লাস্টে নাজিম উদ্দিন (৩৫), ২৫ আগস্ট তাইহুয়া স্টিল এন্টারপ্রাইজের রংপুরের মোহাম্মদ আলী (২৭) ও ২১ আগস্ট মোস্তফা হাকিম গ্রুপের জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন আয়রন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ভোলা রাকিম উদ্দিন নামে একজন লোহার প্লেটের আঘাতে নিহত হন। সবমিলে চলতি বছর মোট ১৩ জন মারা যান। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মাত্র একটি গ্রিন ইয়ার্ড রয়েছে।