Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 2:50 pm

সীতাকুণ্ডে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা: আইজিপি

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোয় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনি কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামে ডিপো এলাকা ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই কনটেইনার ডিপোয় গত শনিবার আগুন লাগার পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জ্বলছে কিছু কনটেইনার। ভয়াবহ ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে জেলা প্রশাসন, যাদের মধ্যে ৯ জনই ফায়ার সার্ভিস কর্মী। দুইশ’র বেশি মানুষ এ ঘটনায় দগ্ধ বা আহত হয়েছেন, যাদের অনেকে এখনও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।

আইজিপি বেনজীর বলেন, ‘এত ফায়ারম্যান এ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনায় মারা যাননি। নিহত ও আহতদের প্রতি আমাদের সমবেদনা। অনেকে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। চিকিৎসা শেষে বোঝা যাবে কেমন ক্ষতি তাদের হয়েছে।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেসরকারি এই ডিপো কর্তৃপক্ষও একটি তদন্ত কমিটি করেছে। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশন, জেলা প্রশাসন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আরও পাঁচটি কমিটি করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তবে থানায় কোনো মামলা বা পুলিশি তদন্তের কোনো উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে কী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবেÑজানতে চাইলে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এরই মধ্যে সরকার তদন্ত কমিটি করেছে। ফায়ার সার্ভিসও তদন্ত কমিটি করেছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে আইনি কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

গত শনিবার রাতে আগুন লাগার পর থেকে সেখানে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার তৎপরতায়। পাশাপাশি ডিপো থেকে রাসায়নিক দূষণ যাতে ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে কাজ করছে সেনাবাহিনীর একটি দল।

আইজিপি বলেন, ‘আশা করি দ্রুততম সময়ে উদ্ধার কাজ শেষ হবে। তবে এখনও পরিস্থিতি পুরো নিরাপদ নয়।’

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুই কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে বেসরকারি এই ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটি গড়ে তোলা হয় ২০১১ সালে। বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানা রয়েছে সেখানে। ওই গ্রুপের আরেক কোম্পানি আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্সে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য রাখা ছিল কনটেইনার ডিপোয়। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ংকর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ডিপোর কর্তৃপক্ষ সেখানে ২৭টি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকার কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে আটটি পুড়ে গেছে এবং সাতটি শনাক্ত করে সরিয়ে রাখা হয়েছে। রাসায়নিক থাকা অন্তত ১২টি কনটেইনার এখনও শনাক্ত করা যায়নি।