প্রতিনিধি, বান্দরবান: তুমব্রু সীমান্তের পর এবার বান্দরবানের চাকঢালা-দোছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের ওপারে হচ্ছে গোলাগুলি। মাঝেমধ্যেই মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্তঞ্চলের বাড়িঘরসহ মানুষজন। গতকাল রোববারও বেলা সাড়ে ১১টার সময় সদর ইউনিয়নের ছেড়ারমাঠ সীমান্তের ৪৩ ও ৪৪ নাম্বার সীমান্ত পিলারের ওপারে গোলাগুলি হয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে দৌছড়ি ইউনিয়নের বাহিরমাঠ সীমান্তের ৪৯ ও ৫০ নাম্বার সীমান্ত পিলারের ওপারের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলা বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দার আবদুর রশীদ ও শামশুল আলম বলেন, শনিবার রাত আটটার পর গোলাগুলি থেমে যায়। তবে গতকাল বেলা সাড়ে এগারোটা ও দুপুরের দিকে আবারও গোলাগুলি হয়েছে। মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমার বাহিরের মধ্যে এ গোলাগুলি হচ্ছে। ১টি বুলেট এসে পড়েছিল এদেশের ভূখণ্ডে। সীমান্তবাসী আতঙ্কে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে আশপাশের আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইমরান বলেন, দোছড়ি সীমান্তের বাহিরমাঠ এলাকার ওপারে মিয়ানমার অংশে রোববার দুপুরেও ৬০ রাউন্ডের মতো গোলা বর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। ইতোমধ্যে সীমান্তে বসবাসরত প্রায় দুই শতাধিক পরিবারকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য আসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। মাইকিং করা হয়েছে। অনেকেই নিকট আত্মীয়ের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়িতে পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করার পর এবার জেলার আলীকদম ও থানচিতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকালে জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্ব) লুৎফুর রহমান স্বাক্ষরিত জনস্বার্থে প্রকাশিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, সীমান্তের ওপারে প্রতিদিনই গোলাগুলি হচ্ছে। সীমান্তবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে সীমান্তের অনেক পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে রোববার সকালের পর সীমান্তের চেরারমাঠ এলাকায় গোলাগুলির কোনো শব্দ শোনা যায়নি।
তাই গত রাতে আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নেয়া অনেকেই পুনরায় নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। বিষয়টি নাইক্ষংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌসকেও অবহিত করেছেন। তাছাড়া সীমান্তে মায়ানমারের কাছাকাছি লোকজনকে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হচ্ছে।