শেয়ার বিজ ডেস্ক: সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গতকাল শনিবার চীনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই নেতাই সীমান্তে উত্তেজনা বন্ধে একমত হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, এখন থেকে দেশ দুটির মধ্যে সামরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও সমর্থন জানিয়েছেন দুই নেতা। খবর রয়টার্স।
হিমালয় সীমান্তে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ সময় পার করার এক মাসের মধ্যে এশিয়ার দুই শীর্ষ নেতা এ বৈঠকে বসলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐতিহাসিক চীন সফর শেষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিজয় গোখালে জানান, সব বিভেদ আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার মতো পরিপক্বতা ও বিজ্ঞতা দুদেশেরই আছে।
মোদির চীন সফরে সরকারি বৈঠক না থাকলেও, দুই নেতা ঘরোয়া বৈঠকে বসছেন দফায়-দফায়। ২৪ ঘণ্টায় মোট ছয়বার বৈঠক করেছেন তারা। কখনও চায়ের কাপ হাতে। কখনও নিরিবিলিতে বসে। চীনের সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, এ ধরনের বৈঠকে কোনো চাপ থাকে না। প্রত্যাশা থাকে না। ফলে আলোচ্যসূচির বাইরে আলোচনায় গিয়েও বাড়তি ফল পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন মতে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে যৌথ আর্থিক প্রকল্প গড়তে রাজি হয়েছেন দুই নেতা। এ নিয়ে দুদেশের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসবেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজ হবে, তা পরে চিহ্নিত করা হবে।
কোনো রকমের সমঝোতা কিংবা ঘোষণা না হলেও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কৌশলগত সামরিক সম্পর্ক, পর্যটন কিংবা বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন মোদি। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশই চীন ও ভারতের। তাই বিশ্বের প্রধান সমস্যাগুলো মেটাতে হলে দুদেশকে উদ্যোগী হতে হবে।’
অন্যদিকে শি জিনপিং বলেন, ‘বিশ্বের শান্তির স্বার্থেই ভারত ও চীনের সম্পর্কে উন্নতি হওয়া দরকার।’
সফরের প্রথম দিন শুক্রবার চীনের হেবেই প্রদেশের রাজধানী ইউহানে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। হেবেইয়ের প্রাদেশিক জাদুঘরে মোদিকে স্বাগত জানান শি। প্রথম দিনের ব্যস্ত সফরসূচিতে জাদুঘর পরিদর্শনসহ ছিল প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক ও দিনের শেষভাগে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক। দুজনের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় শুধু দুজন দোভাষী ছাড়া আর কোনো ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকটিকে একটি ‘অনানুষ্ঠানিক সম্মেলন’ হিসেবে রাখার জন্য দুই রাষ্ট্রপ্রধান বেইজিংয়ের বাইরে একত্র হন।
এদিন বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের কাছে মোদি বলেন, ‘আমি আশা করি এ রকম অনানুষ্ঠানিক সম্মেলন দুদেশের মধ্যে ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়াক। আগামী বছর ভারতে যদি এ রকম একটি অনানুষ্ঠানিক সম্মেলন করতে পারি, তাহলে আমি খুবই খুশি হব।’