শেয়ার বিজ ডেস্ক: জাতিসংঘের প্রকাশিত চলতি বছরের বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় টানা ষষ্ঠবারের মতো সবচেয়ে সুখী দেশের খেতাব জিতেছে ফিনল্যান্ড। গতকাল ‘বিশ্বের সুখী দেশ, ২০২৩’ শীর্ষক এই তালিকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। তালিকায় গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থানে ২৩ ধাপ অবনতি ঘটেছে। এশিয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের তুলনায় সুখে রয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা।
তালিকায় একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। জাতিসংঘের সুখী দেশের এই তালিকায় ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৪তম হলেও এ বছর তা ১১৮তম স্থানে রয়েছে। তালিকার তলানিতে থাকা ২০ দেশের মধ্যে ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশের।
২০১২ সালের পর থেকে প্রত্যেক বছর ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালন করা হয়। ওই বছরের ১২ জুলাই এই দিনকে ‘বিশ্ব সুখ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। সুখ ও ভালো থাকাকে সর্বজনীন লক্ষ্য ও প্রত্যাশা হিসেবে ধরে নিয়ে দিবসটি ঘোষণা করা হয়।
সুখ দিবসের প্রাক্কালে প্রত্যেক বছর ২০ মার্চ সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে জাতিসংঘ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট, ২০২৩’ শীর্ষক এই তালিকা কয়েকটি সূচকের হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়। সূচকগুলো হলোÑস্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, জিডিপি, দুর্নীতি প্রভৃতি।
মানুষের সুখের নিজস্ব মূল্যায়ন, সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে শূন্য থেকে ১০ নম্বরের মধ্যে এসব সূচকের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৩৭টি সদস্যরাষ্ট্রের ওপর চালানো হয় এ জরিপ।
২০২৩ সালের তালিকায় ফিনল্যান্ডের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড; চতুর্থ ইসরাইল ও পঞ্চম নেদারল্যান্ডস। সেরা ১০টি
সুখী দেশের মধ্যে এরপর রয়েছে সুইডেন (ষষ্ঠ), নরওয়ে (সপ্তম), সুইজারল্যান্ড (অষ্টম), লুক্সেমবার্গ (নবম) ও নিউজিল্যান্ড (দশম)।
এবারের সুখী দেশের তালিকায় কানাডা ১৩, যুক্তরাষ্ট্র ১৫ ও যুক্তরাজ্য ১৯তম অবস্থানে রয়েছে। যুদ্ধকবলিত ইউক্রেন রয়েছে ৯২তম অবস্থানে। আর রাশিয়া রয়েছে ৭০তম অবস্থানে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশ হিসেবে এবারের তালিকায় শীর্ষে আছে নেপাল (৭৮তম)। এছাড়া পাকিস্তান ১০৮, শ্রীলঙ্কা ১১২, ভারত ১২৬তম অবস্থানে রয়েছে। এবারের তালিকায় সর্বনি¤œ অবস্থানে থাকা আফগানিস্তান গত বছরও সবার নিচে ছিল।
২০২২ সালের সুখী দেশের তালিকা করতে গিয়ে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে কভিড মহামারিকে। মহামারির জের এখনও টানছে বিশ্ব। ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কভিড মানুষের ভালো থাকার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে বেকারত্ব।
এছাড়া কভিড মহামারির ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ সারাবিশ্বকে ভয়াবহ সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতি। দেশে দেশে বেড়েছে খাবার-জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। এবারের সুখের সূচকে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিফলনও দেখা গেছে।