সুদহার বাড়ালো যুক্তরাষ্ট্র

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদহার বাড়িয়েছে। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়েছে। গত এক দশকে এ নিয়ে দুবার সুদহার বাড়ালো ব্যাকটি। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে সুদহার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়। খবর বিবিসি।

গত সেপ্টেম্বরে দেশটিতে এক লাখ ৫৬ হাজার মানুষ নতুন করে চাকরি পেয়েছে, যেখানে চাকরি পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি। এর আগের মাসেও দেখা যায় প্রায় একই চিত্র। এই দুই মাসে তিন লাখ ৬০ হাজার মানুষের চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। ফলে দেশটিতে বেকারত্বের হার একটু বেড়ে দাঁড়িয়েছিল পাঁচ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী সভায় সুদহার বাড়ানোর একটা সম্ভাবনা থাকলেও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবং শ্রমবাজারের এ খারাপ অবস্থার কারণে তা হয়নি।

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। দুবছরের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। আর এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে ভোক্তা খরচ ও রফতানি খাত।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের তথ্যমতে, তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়েছে তিন দশমিক দুই শতাংশ হারে। এর আগে দুই দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর এটাই প্রবৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার। ওই সময়ে উল্লেখযোগ্য রফতানি ও অভ্যন্তরীণ ভোক্তা খরচ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এদিকে চাকরির বাজারেও সম্প্রতি ইতিবাচক খবর এসেছে।

যাচাই-বাছাই শেষে অবশেষে সুদহার বাড়ানো হলো। ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে দেশটির সুদহার ছিল প্রায় শূন্য। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে সুদহার শূন্যে নামিয়ে আনে ফেড। অর্থাৎ কোনো সুদ ছাড়াই ব্যাংকগুলো ফেড থেকে অর্থ ধার করতে পারতো। যে হারে ব্যাংকগুলোকে ধার দেওয়া হয়, তাকে ‘ফেডারেল ফান্ডস রেট’ বা ‘নীতিনির্ধারণী সুদহার’ বলা হয়। সাত বছর পর সুদহার বাড়ানোর বিষয়টি বড় ধরনের অর্থনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখা দেয়।

ফেডপ্রধান জ্যানেট ইয়েলেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অর্থনীতির জন্য স্বল্প মেয়াদে ধীরে ধীরে সুদহার বাড়ানো প্রয়োজন এবং এবার একটি পরিমিত হারে বাড়ানো হয়েছে। তবে আগামী বছর আবার নীতিনির্ধারণী সুদহার বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জ্যানেট। ‘ফেডারেল ফান্ডস রেট’ আগামী বছর এক দশমিক চার শতাংশ, ২০১৮ সালে দুই দশমিক এক শতাংশ এবং ২০১৯ সাল নাগাদ দুই দশমিক ৯ শতাংশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ট্রাম্পের অর্থনৈতিক কৌশল কী হতে পারেÑতা বিস্তারিত না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এরই মধ্যে জানিয়েছেন, কর কমানো, ব্যয় বাড়ানো এবং নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা হবে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনীতিবিদরা সুদহার বাড়ানোর প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, সুদহার বাড়ানো নির্ভর করে মূল্যস্ফীতির ওপর। ব্যাংকটি পরবর্তী কয়েক বছরের জন্য মূল্যস্ফীতির দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। যদিও এখনও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশের নিচে রয়েছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার আগামী তিন বছর দুই দশমিক এক শতাংশ থাকবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া এ সময়ে বেকারত্বের হার কমবে এবং আগামী বছর মূল্যস্ফীতি এক দশমিক ৯ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ব্যাংকটি।

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০