সুবিধাজনক স্টকের পুনঃখরিদকরণ

মিজানুর রহমান শেলী: যেসব বড় বড় কোম্পানিতে আমাদের অনেক বড় বড় বিনিয়োগ রয়েছে, সেসব কোম্পানি বিশালায়তনে স্টক পুনরাই খরিদকরণে অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তারা এ কাজটি বারবার করছে। বিশেষ করে যখনই দাম ও মূল্যের মধ্যে বিভেদ তৈরি হচ্ছে, বিস্তৃত পরিসরে তখনই তারা এ ঘটনাটি ঘটনার চেষ্টা করছে। শেয়ারহোল্ডারের জায়গা থেকে যদি চিন্তা করি, তবে বলব এই প্রক্রিয়াটি বেশ উৎসাহব্যঞ্জক এবং প্রণোদনা দিয়ে চলেছে। বস্তুত এটা নির্দিষ্ট দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে সম্পন্ন হয়ে থাকে: এর একটি কারণ এত বেশি মাত্রায় নিগূঢ় ও নিথর যে কোনোভাাবেই তা অনুধাবন করা যায় না। কোনো উপায়েই এর সত্যিকার পরিস্থিতিটার পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
যাহোক, এই নির্দিষ্ট কারণটি মৌলিক গাণিতিক সূত্রের সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। দেখা যায়, এর প্রধান প্রধান পুনরাই খরিদকরণে বিভিন্ন দাম হাঁকা হয়ে থাকে। এমনকি এই বিভিন্ন দামের খরিদকরণে দামগুলো প্রতি শেয়ারে ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর অনেক নিচে অবস্থান করে। আবার এই ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর একটি বৈশিষ্ট্য হলো তা দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে থাকে এ পরিস্থিতিতে। বলা হয়ে থাকে এটা অনেক বড় উল্লেখযোগ্য উপায়। যখন কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের স্টকই পুনরাই কিনে নেয়, তখন তারা খুব সহজেই চলমান এক ডলার মূল্যমানের বিপরীতে দুই ডলার আহরণ করে থাকে। তবে করপোরেট অধিগ্রহণ প্রোগ্রামগুলো ঠিক এরকম হয় না। সেখানে বিশাল পরিসরে ভিন্নতা স্পষ্ট হয়ে থাকে। এমনকি বহুসংখ্যক কেইসে আমরা দেখেছি, এটা নিরুৎসহিত হয়ে থাকে। এমনকি সেখানে তারা এক ডলারে প্রবৃদ্ধিগত মূল্যমানের বিপরীতে এক ডলারের কাছেও কোনো অর্থ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় না।
পুনরাই খরিদকরণে এই অন্যান্য মুনাফাগুলো সংক্ষেপিত হিসাব-নিকাশের খাতিরে কম গুরুত্ববহ হয়ে দেখা দেয় কিন্তু তা সম্পূর্ণ রূপে অনেক সময় সম্পন্ন হয়ে থাকে। কখনও কখনও একটি কোম্পানির বাজার মূল্য তার বিজনেস ভ্যালুর অনেক নিচে অবস্থান করে থাকে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে পুনরাই খরিদকরণে ম্যানেজমেন্ট পরিষ্কারভাবে যা কিছু প্রদর্শন করে তা সক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে খুব দ্রুততার সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের সম্পদ বাড়তে থাকে। কিন্তু কোনোভাবেই তা ম্যানেজমেন্টের প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়িয়ে তোলার মতো কাজে সক্রিয়তা দেখায় না। অর্থাৎ এ প্রক্রিয়ায় ম্যানেজমেন্টের প্রভাব বলয় তৈরি হয় না। মালিকদের নিজস্ব প্রভাব যেভাবে স্থির থাকে, ঠিক তেমনিভাবে শেয়ারহোল্ডারদের প্রভাবও স্থির থাকে। বলাবাহুল্য, মালিক ও শেয়ারহোল্ডার উভয়ের জন্যই এটা খুবই নিরাপদ। বিশেষ করে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ক্ষতিই করতে পারে না। এটা খুব সৌভাগ্যবশত বিষয়। এমনকি এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে বিনিয়োগী ব্যবসায় একটি ভালো পরিবেশ তৈরি হয়, সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। এর ফলে শেয়ারহোল্ডাররা তাদের অনুমান এবং আকাক্সক্ষা বাড়াতে থাকে। এমনকি ভাবী শেয়ারহোল্ডার বা বিনিয়োগ করতে চলেছে এমন শেয়ারহোল্ডারদের জন্যও এখানে একটি শুভ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়ে থাকে। ফলে ভাবী শেয়ারহোল্ডাররাও তদের আকাক্সক্ষা, পরিকল্পনা ও অনুমান বৃদ্ধি করে নেওয়ার সুযোগ পায়। বিনিয়োগে তারা আরও বেশি উৎসাহ পেতে থাকে। তারা উভয়ই ভবিষ্যতে অনেক বেশি পরিমাণের লভ্যাংশ পাওয়ার পরিবেশ পরিষ্কারভাবে দেখতে পায়। ফলে ব্যবসাটির প্রতি তাদের একটি আকৃষ্টতা সৃষ্টি হতে থাকে। তারা যেন একটি উৎসবমুখর পরিবেশের গন্ধ পেতে থাকে। বিপরীতে, এই ঊর্ধ্বমুুখী প্রণালি অনেক বেশি বেশি বাজার মূল্য বৃদ্ধি করে থাকে। এই মূল্যটা ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর পথকে নিয়ত অনুসরণ করে থাকে। প্রবৃদ্ধিতে ইনট্রিনসিক বিজনেস ভ্যালুর সঙ্গে বাজার মূল্যের অনুপাত ও প্রবৃদ্ধি একটি নিয়ম মেনে চলে। বলাই বাহুল্য যে, এই দাম-দরগুলো সামগ্রিকভাবে যৌক্তিক। বিনিয়োগকারীদের উচিত একটি ব্যবসার জন্য অনেক বেশি ব্যয় করা। আর এই অর্থ শেষ অবধি ম্যানেজারের হাতেই জমা হতে থাকে। ফলে ম্যানেজারের হাতে এটি একটি প্রো-শেয়ারহোল্ডার ঝোঁক-প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে তারা কখনোই তাদো হাতে এটা ম্যানেজারদের স্ব-স্বার্থ প্রমাণিত হয় না। এটা তখন বস্তুত একটি ভিন্ন ধাঁচের ড্রাম বাজাতে থাকে। এই বিষয়টিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে চিন্তা করতে গেলে দেখা যায়, মাঝে মাঝে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। আর তা হলো, আপনি একটি কোম্পানির একেবারে সংখ্যালঘিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার হতে গেলে আপনাকে কী পরিমাণে লগ্নি করতে হবে। বিশেষ করে রবার্ট ভস্কোর কোম্পানির উদাহরণ দেওয়া যায়। যখনে রবার্ট ভস্কোর নিয়ন্ত্রণে সবকিছু চলে আসে তখন তারা কীভাবে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
অবস্থা বা পরিস্থিতিকে আমরা যেভাবেই বিবেচনা করি না কেন বা বর্ণনা করি না কেন, এই প্রণালির মোক্ষম শব্দ হলো ‘প্রদর্শন’ বা জাহির করা। জাহির করাই হলো এই প্রক্রিয়ার প্রধান কাজ। কিছু ম্যানেজার থাকেন এই পরিস্থিতিতে, যারা কোনোভাবেই স্টক পুনরাই খরিদ করতে চাই না। আবার কিছু ম্যানেজার থাকেন যাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো ধারাবাহিকভাবে স্টক পুনরাই খরিদকরণের দিকে নুয়ে পড়া। তারা সবসময় এ প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। উল্লেখ্য, মাঝে মধ্যে ম্যানেজারদের এই প্রবণতা মালিকদের মনের ইচ্ছার সঙ্গে মিশে যায়। কেননা, মালিকরাও মাঝে মধ্যে স্টক পুনরাই খরিদ করতে চান। আর যখনই দেখা যাায় ম্যানেজার আর মালিক একই চিন্তা করছেন তখনই ম্যানেজার তার ইচ্ছা পূর্ণ করানোর জন্য মালিকের ইচ্ছাকে আরও উদ্দীপ্ত করাতে প্রচেষ্টা চালায়। ফলে তারা মালিকের সামনে গিয়ে নানা রকম বাগাড়ম্বর চালাতে থাকে। এ বাগাড়ম্বর মালিকরা কখনও বুঝতে পারে, আবার অনেক সময়ই বুঝতে পারে না। ম্যানেজাররাই এ সময় জেনেও কথা বলে, আবার না জেনেও অনেক কথা বলে ফেলে। তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, তারা নিজেদের জানার ঊর্ধ্বেই প্রণোদণামূলক বক্তব্য দিয়ে থাকে। যাহোক তারা জনসম্মুখে এই বক্তব্যগুলো দিয়ে থাকে, নাকি দেয় না সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আবার যদি তারা তা করে তবে কতবার তা করে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। এমনকি জনসম্মুখে বলা সময় কতটা অলঙ্কার মিশিয়ে এ কথাগুলো বলে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এসবের গোড়ার কথা হলো ‘শেয়ারহোল্ডারদের সম্পদ সর্বোচ্চ পৌঁছে দেওয়া’। এই বছর এই প্রবাদটি খুব মুখরোচক ছিল।
এই দর্শন রচনাবলি সম্পাদনা করেছেন লরেন্স এ. কানিংহ্যাম।
অনুবাদক: গবেষক, শেয়ার বিজ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০