সুবিধা চায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মালিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা, বানিজ্য, আমদানি, রপ্তানি, শিল্পোৎপাদনসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর অধীন ৭৬টি শিল্প এলাকার সব কারখানা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শিল্প মালিকরা। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এসব শিল্প মালিকরা সরকারের কাছে কিছু সুবিধা চেয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, ছয়মাসের পানি বিল মওকুফ, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ছয় মাসের বিল বিলম্বে পরিশোধ, প্লটের কিস্তিতে ছাড় প্রভূতি। রোববার (৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির উর্ধ্বতন সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, দেশের সকল বিসিক শিল্প এলাকার কারখানাসমূহে দক্ষ, অর্ধ-দক্ষ, অদক্ষ মিলিয়ে প্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার ৬২০ শ্রমিক-কর্মচারি কর্মরত আছেন। আর এসব শিল্প কল-কারখানায় শিল্প মালিকদের প্রায় ২৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকার আর্থিক বিনিয়োগ রয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে দেশব্যাপী লকডাউন থাকায় বিসিক শিল্প এলাকায় বর্তমানে সকল উৎপাদনমুখী কল-কারখানা বন্ধ রয়েছে। যার ফলে এ বিশাল অংকের বিনিয়োগ আজ হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, বিসিক শিল্প এলাকার কারখানাসমূহ মূলত স্থানীয় বাজার নির্ভর। কাঁচামালের সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন, স্থানীয় বাজারে বিপণন, সরবরাহ, রপ্তানি কার্যক্রম এখন বন্ধ রয়েছে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় কিছুদিন পর শ্রমিকদের বেতন, বোনাস দেয়া শিল্প মালিকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তাছাড়া পবিত্র রমযান ও ঈদ-উল-ফিতরও আসন্ন। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার ৫টি প্যাকেজ ঘোষণা করায় বাংলাদেশ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

বিসিক শিল্প এলাকার কারখানাসমূহের পানির বিল আগামী ৬ মাস মওকুফ করার জন্য এবং প্রতি মাসের বিদুৎ ও গ্যাস বিল পরবর্তী ৬ মাস ৩টি সম-বিভাজিত কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ প্রদানের আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে বিসিক এর অন্তর্ভূক্ত প্রতিটি শিল্প প্লটের নির্ধারিত একটি সার্ভিস চার্জ রয়েছে যা তিনি আগামী এক বছরের জন্য মওকুফ ও বিসিক শিল্প নগরীর অন্তর্ভূক্ত প্লটের কিস্তি আগামী এক বছরের জন্য স্থগিত রাখতে সরকারের নিকট আবেদন জানান।

হোসেন এ সিকদার বলেন, শিল্পোদ্যাক্তাদের এ বছরের আয়কর ও ভ্যাট যেন আগামী তিন বছরে সমান তিনটি কিস্তিতে সমন্বয়ের মাধ্যমে জরিমানা ছাড়া প্রদান করতে পারে সে বিষয়ে সরকারের বিশেষ বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি বিসিক শিল্পনগরীতে স্থাপিত নতুন শিল্প কারখানা এবং বিএমআরই (ব্যালেন্সিং, আধুনিকায়ন, বিস্তার এবং প্রতিস্থাপন) শিল্প ইউনিটের মূলধনী যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য গৃহিত ঋণসহ অন্যান্য ঋণের সুদ আগামী ৬ মাসের জন্য মওকুফ করতে সুপারিশ করা হয়। শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, মোড়ক সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ কর অবকাশ ও শুল্ক রেয়াতের আহ্বান জানান তিনি। তাছাড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি। তাই সরকারকে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।

###

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০