Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 2:53 am

সুরক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করতে আনসার বাহিনীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনসার বাহিনীকে দেশের বৃহৎ বাহিনী অভিহিত করে তাদের সততা, আন্তরিকতা এবং সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণের সুরক্ষা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা চাই আপনারা (আনসার বাহিনী) দেশের সর্ববৃহৎ বাহিনী হিসেবে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা, আন্তরিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে পালন করে জননিরাপত্তার ক্ষেত্রে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে সমর্থ হবেন।

গতকাল সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ৪০তম জাতীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। খবর: বাসস।

প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে আনসার বাহিনীর সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখা এবং এ পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে আনসার সদস্যরাও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ তাকে অভ্যর্থনা জানান।

প্রধানমন্ত্রীকে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ থেকে অভিবাদন জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর আটটি ক্যাটেগরিতে ১৪৩ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যের মধ্যে ‘সেবা’ ও ‘সাহসিকতা’ পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

আনসার ও ভিডিপি’র প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতা বর্তমানে সর্বজন স্বীকৃত।’ তিনি বলেন,‘জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনসহ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও মৌলবাদ নির্মূলে আনসার বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ ও জনসম্পৃক্ত একটি বৃহৎ শৃঙ্খলা বাহিনী উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ বাহিনীর কার্যক্রম তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬১ লাখ। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামে বা মহল্লায় এ বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। কাজেই সরকারের যে কোনো সচেতনতামূলক কার্যক্রম আনসার-ভিডিপি’র সদস্যদের মাধ্যমে খুব সহজেই তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিধান করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করছে।’ তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় এ বাহিনীর সদস্যরা ‘এভসেক’ (এভিয়েশন সিকিউরিটি) এর অংশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। দেশ ও জনপদকে নিরাপদ রাখতে দুটি মহিলা ব্যাটালিয়নসহ এ বাহিনীতে ৪২টি আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য এলাকায় এ বাহিনীর ১৬টি ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে অপারেশনাল ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া নব গঠিত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা কূটনৈতিক এলাকা, কূটনৈতিক ব্যক্তি এবং দেশের বিশিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’

‘আনসার ব্যাটালিয়ন আইন’ প্রণয়ন করার কার্যক্রম সরকার হাতে নিয়েছে এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স ও আম্রকাননের নিরাপত্তার জন্য দুটি আনসার ব্যাটালিয়ন গঠনের কার্যক্রম প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০-২১ সালকে তার সরকার ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে উদ্যাপনে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান।