নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনায় কুপোকাত দেশ। হাসপাতালে বেড, চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকটে করোনা রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। মহামারি এ রোগের চিকিৎসা দিতে গিয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীরা।
বিশেষ করে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর অপ্রতুলতায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন। সরকার সংকট মোকাবেলায় চেষ্টা করে যাচ্ছে, দিয়ে যাচ্ছে সরঞ্জাম। তবুও সংকট রয়েই যাচ্ছে। সংকট মোকাবেলায় বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, অ্যাসোসিয়েশন এগিয়ে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় বিশেষায়িত দুই হাসপাতালে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে আসলেন বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে উন্নতমানের মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মে) অ্যাসিয়েশনের সভাপতি ও এনবিআর সদস্য (গ্রেড-১) খন্দকার মুহাম্মদ আমিনুর রহমান অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুই হাসপাতালে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে ১০ মে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিসিএস (কাস্টমস এন্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) এর উদ্যোগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের দিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেওয়া হয়েছে।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা: জামিল আহমেদ হাসপাতালের পক্ষে পণ্য সামগ্রী গ্রহণ করেন। তিনি কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও পরিচালক ডা: শাহ্ নুরুন নবী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সকৃতজ্ঞ চিত্তে পণ্য সামগ্রী গ্রহণ করেন। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে কাস্টমসের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন। উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদ্বয় দেশের করোনা রোগীর ব্যাপক চাপের বিপরীতে কর্মরত চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর অপ্রতুলতা এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টিকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।
আরো পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে কাস্টমস-ভ্যাট বিভাগের একদিনের বেতন
কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তাদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তাদের জন্য কোন বিশেষ ব্যবস্থা করার সম্ভাব্যতা বিষয়ে আলোচনাকালে দুই হাসপালের কর্ণধারদ্বয় জানান, যে এটিকে তাঁরা বিশেষ অগ্রাধিকার হিসাবে দেখার চেষ্টা করবেন। তবে দেশে বর্তমানে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু তাদের জন্যও কোন বিশেষ ব্যবস্থা বর্তমানে নেই মর্মে তারা জানান। কিন্তু কাস্টমস হাউসগুলো লকডাউন হলে এর পরিণতি দেশের জন্য খুবই ভয়াবহ হবে বিবেচনায় এ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সভাপতি এসব হাসপাতাল পরিচালনার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা মেটানোর বিষয়ে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সবাইকে আন্তরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পণ্যসামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং ভ্যাট, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মুসফিকুর রহমান, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনার ডা. হুমায়ুন কবীর, এবং ডেপুটি কমিশনার রিজভী আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

মহাসচিব সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, যে দেশের অর্থনীতিতে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী, দেশের স্বাস্থ্য খাতের আমদানি, শিল্পের কাঁচামালসহ সকল প্রকার আমদানি- রপ্তানি কার্যক্রম যেন বাধাহীনভাবে চলতে পারে সে লক্ষ্যে কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তারা দিনরাত পরিশ্রম করছেন।
তিনি বলেন, এ সকল পণ্য সামগ্রী দ্রুত বাজারে আসার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকাকে আবারো সক্রিয় করতে হলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা খুবই জরুরী। তাই হাসপাতালগুলো যেন পর্যাপ্ত লজিস্টিকস সুবিধা পেতে পারে সে লক্ষ্যে তাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।
###