Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 12:38 pm

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কোম্পানিগুলোকে পারিবারিক প্রভাবমুক্ত হতে হবে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গতিশীল করতে দরকার কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সবার আগে দরকার কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদে যোগ্য লোক নিয়োগ। পর্ষদ সদস্যরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে কোম্পানির হিসাব-নিকাশসহ সব কিছু সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়। পাশাপাশি কোম্পানি তার মূল লক্ষ্য অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ফলে বছর শেষে কোম্পানি ভালো মুনাফা অর্জন করে। তার ফল পান বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু পুঁজিবাজারের বেশিরভাগ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পারিবারিক আধিপত্য রয়েছে। উদ্যোক্তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনকে দিয়েই পর্ষদ গঠন করা হচ্ছে। এতে কোম্পানি চলছে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। আহমেদ রশীদ লালীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফোরকানউদ্দিন এফসিএ।

নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে খেলাপি বাড়ছে। আর এসব ব্যাংকে মূলধন জোগান দিচ্ছে সরকার। মাঝখানে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের অর্থ মানে জনগণের অর্থ। তিনি বলেন, ঋণগ্রহীতারা অনেক প্রভাবশালী। তারা বারবার ঋণ রিশিডিউলিং করে নিচ্ছে।  এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, নতুন বুক বিল্ডিং মেথডে অনিয়ম করার সুযোগ কমেছে। এখন পাতানো খেলা সাজানো অনেক কষ্ট হবে। তিনি বলেন, এটা একটা টেস্ট কেস। এ পদ্ধতি কার্যকর হলে আরও বেশি আইপিও আসবে। বর্তমান বাজার ভালোর দিকে। এখন নতুন নতুন আইপিও এলে বাজার আরও গতিশীল হবে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের কমপক্ষে দুই শতাংশ শেয়ার থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত ভালো একটি উদ্যোগ। এ উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

ফোরকানউদ্দিন বলেন, সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির জন্য চারটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংকগুলোতে সুশাসন নেই। রাজনৈতিকভাবে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ কারণে পরিচালকদের কোনো জবাবদিহি নেই। তাছাড়া ব্যাংকের এমডিসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ জন্য দায়ী। তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতার অভাবে খেলাপি ঋণ আদায় হয় না। তিনি বলেন, বোর্ডে যোগ্য লোক বসাতে হবে। যারা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে পারেন, তাদের পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে। পরিচালকদের জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। পাশাপাশি পরিচালকদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পরিচালকদের দুই শতাংশ শেয়ার থাকার বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন পরিচালকের  সর্বনি¤œ পাঁচ শতাংশ শেয়ার থাকা উচিত। দুই শতাংশের পরিবর্তে পাঁচ শতাংশ শেয়ারের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা উচিত। তাহলে পারিবারিক প্রভাবমুক্ত হবে পর্ষদ। আর পর্ষদ পারিবারিক প্রভাবমুক্ত হলে কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সহজ হবে।