নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে দেশের সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত মূল্যায়ন করা হবে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সচিব মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি-সচিব মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ৩১ জুলাই নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু হবে। এজন্য সুশীল সমাজের ৬০ প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে দু-একটি সংখ্যা বাড়তেও পারে বলে তিনি জানান। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর শিগগিরই হয়তো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির সঙ্গে বসা হবে জানান ইসি-সচিব।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের পাঠানোর জন্য চিঠি তৈরি হয়ে গেছে। আজকালের মধ্যে চিঠি পৌঁছে যাবে। প্রতিনিধিদের মধ্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, কলাম লেখক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক ও সিভিল সার্ভিসের প্রবীণ সচিব কিংবা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের চিঠি পাঠানো হবে। বিভিন্নভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে যারা নিয়োজিত আছেন, এমন ব্যক্তিদের চিঠি দেওয়া হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হয়, সে বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হবে। এ-সংক্রান্ত গত নির্বাচনের আইন ও বক্তব্যগুলো তাদের দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা প্রস্তুতি নিয়ে আসতে পারেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত করা। সেই আঙ্গিকেই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হবে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা অতীতের সংলাপের রেকর্ড বুক রাখব এবং এ রেকর্ড বুকগুলো সংলাপ শেষে একত্রে প্রতিবেদন আকারে বের করা হবে। এ প্রতিবেদনে সবার সুপারিশ, যেগুলো গ্রহণ করার মতো, সে অনুসারে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ডিজিটাল ভোটিং মেশিন (ডিভিএম) বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘রাজশাহী ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে যে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে, তা আমরা ব্যবহার করবো না। আমরা ভিন্ন আঙ্গিকে এগোচ্ছি। ডিভিএম নিয়ে আজও (গতকাল) একটি প্রেজেন্টেশন আছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক বা একাধিক ওয়ার্ডে ডিভিএম পাইলট আকারে ব্যবহার করতে পারব। এটাই পরিকল্পনা।’
ডিভিএমের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, আগেরটায় (ইভিএম) কোনো ডিসপ্লে ইউনিট ছিল না। এটাতে একটি ছোট মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মতো থাকবে। যারা এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট থাকবেন, তারা ডিসপ্লেতে দেখতে পারবেন। একজন ভোটার আসার পর তার ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলে গেলে, তার ছবিসহ ভোটার তালিকা ডিসপ্লেতে দেখা যাবে। সবাই দেখে ঠিক আছে বললে, তবেই একজন ভোট দিতে পারবেন। প্রতিটি মেশিনের সঙ্গে ভোটার তালিকা সংযুক্ত করা থাকবে। একেকটি কেন্দ্রে দুটি মেশিন লাগবে।
এ সময় সচিব মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, সারা বিশ্বে দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তারা ভোট দিতে পারেন না। ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেন তারা ভোট দিতে পারেন, তা নিয়ে কাজ চলছে। হয়তো আগামী পাঁচ-দশ বছর পর তারা বিদেশ থেকে ভোট দিতে পারবেন।