সুষ্ঠু নির্বাচনে ইসিতে বিএনপির ২০ দফা প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদ ভেঙে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি জানিয়েছে, সব রাজনৈতিক দলকে সভা-সমাবেশের অনুমতি দিতে হবে। নির্বাচনে প্রতিরক্ষাবাহিনী নিয়োজিত করতে হবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনে বিএনপির পক্ষ থেকে ২০ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব প্রস্তাবকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের খুব বেশি কিছু করার নেই। তারপরও এ সংলাপের পর বিএনপি কিছুটা আশাবাদী বলেই মনে করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা তুলে নিতে হবে, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ইভিএম/ডিভিএম যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। দলীয়করণ ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। সব সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে। একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না।

এদিকে ইসির সঙ্গে বিএনপির সংলাপকে ইতিবাচক বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সামনে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও ইসির সংলাপ আছে। আমরা সংলাপে ১১ দফা উত্থাপন করব। সেগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হবে। আগামী বুধবার ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নজরুল ইসলামের যোগদান ও পুরোনো সচিবের বিদায় উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে ভুল করেছিল। আশা করি, বিএনপি এবার সে ভুলের পুনরাবৃত্তি করবে না।

এর আগে সকালে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, বিএনপির নেতৃত্বে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে সিইসি এ মন্তব্য করেন। তিনি জিয়াউর রহমানসহ বিএনপি সরকারের নানা ইতিবাচক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন সিইসি।

বিএনপি সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সিইসি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক, পৃথক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন গঠন, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, আইন কমিশন গঠন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরে উন্নীতকরণসহ অনেক উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কার্যক্রম এ দলের শাসনামলে হয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাদের সফল রাষ্ট্রপরিচালনার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। বৃহৎ রাজনৈতিক দল পরিচালনায় তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আজকের সংলাপের দিকে জাতি তাকিয়ে রয়েছে। নির্বাচন কমিশন অধীর আগ্রহ ও অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে, অতি ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করছে। নির্বাচন কমিশন বিএনপির সঙ্গে সফল সংলাপ প্রত্যাশা করে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সিইসি কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংলাপ শুরু হয় বেলা ১১টায়। বিএনপির পক্ষ থেকে ১৬ জন প্রতিনিধি সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। বেলা ২টার দিকে সংলাপ শেষ হয়। বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, আমীর খসরু, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবদুল হালিম, আবদুর রশিদ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০