Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 1:14 am

সুষ্ঠু নির্বাচন ও দেশ পরিচালনার ব্যর্থতার সব দায় সরকারের: মির্জা ফখরুল

প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইসির ব্যর্থতা, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যর্থতা, দেশ পরিচালনার ব্যর্থতার সব দায় আ’লীগের। আ’লীগের সভানেত্রী ও সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ দায় কোনভাবেই এড়াতে পারবে না। সার্চ কমিটি নিয়ে আ’লীগ কি সিদ্ধান্ত নেবে তা আমরা বলতে পারি না। তারা যদি বিএনপিকে নিয়ে কথা বলে, সেটা বলতে পারে তবে তা কতটুকু সমাচিন হবে তা ভেবে দেখা দরকার। তিনি রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।

সার্চ কমিটির তালিকা তৈরীর বিষয়ে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আ’লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না, এটা পরিক্ষিত সত্য। আমরা জাতীয়ভাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, এই সার্চ কমিটির তালিকা আমাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। এমনকি নির্বাচন কমিশনও আমাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। সার্চ কমিটি সম্পর্কে আমাদের কোন আগ্রহ নেই। কমিটির যাকে প্রধান করা হয়েছে তিনি নিজেই আ’লীগের নমিনেশন প্রত্যাশী ছিলেন। তার পিতা আ’লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার ভাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন। সেখানে আমরা কি করে আশা করতে পারি এই সার্চ কমিটি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেখানে আরও একজন আছেন, যারা এর আগে নির্বাচন কমিশনে ছিলেন তাদের ভূমিকা আমরা দেখেছি। সুতরাং নিরপেক্ষতার বিষয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে।

গুম-গুপ্তহত্যার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গুমের বিষয়টি সকল দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, এমপিরা অস্বীকার করা চরমভাবে মানবাধিকার লংঘন করেছেন। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমরা ধারনা করছি খুব শীঘ্রই আরও ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক ভাবে এ সমস্যার মুখোমুখী হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সমাবেশ করছি, করোনার কারনে একটু বন্ধ রয়েছে, সামনের দিনে আরও আন্দোলন হবে। আপনারা আন্দোলন বলতে যেটা দেখতে চান সেটা হলো হরতাল। কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে ডেমোক্রেট রাজনৈতিক দল থাকলে এ জাতীয় আন্দোলন কাজে লাগে, কিন্তু বর্তমানে তো সে জাতীয় দল ক্ষমতায় নেই। আমরা বিভিন্ন কৌশল নিয়ে এগুচ্ছি। রাজনৈতিক ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়, ফ্যাসিবাদের লক্ষ্যই হলো এটা, মানুষকে আপনার স্তব্ধ করে দেওয়া, ভীতি ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা, এটা একটা প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন এমন থাকলে সবাই তা মেনে নিতে শুরু করে। এ অবস্থায় কিন্তু বাংলাদেশ বর্তমানে চলছে। সকলকে সচেতন হতে হবে, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে বেরিয়ে আসতে হবে, তাদের অধিকারের জন্য। দেশকে রক্ষা করার জন্য। সমাজকে রক্ষা করার জন্য তাদের স্বোচ্চার হতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গুম হওয়া ব্যক্তিদের নামের তালিকা জানতে চেয়েছি। গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানা যায় আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে যায় এবং গুম হতে যারা দেখেছে তারাও গুম হয়েছে। ইলিয়াস আলীকে দেখেছেন কিভাবে গুম করা হয়েছে। তার ড্রাইভারও গুম। এ জাতীয় অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মীকে গুম করা হয়েছে। ঢাকার একটি এলাকা থেকে ৮ জনকে গুম করা হয়েছে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি তাজু খান, আবু তাহের দুলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, আনসারুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারেক আদনান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: সোহেল রানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।