আজকাল রাজপথের অনেককে সাইকেল চালাতে দেখা যায়। সাইকেল চালানোর সুফল অনেক। সাইকেল চালানো মূলত অ্যারোবিক এক্সারসাইজ, যা গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস, ঘাম ঝরা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া ও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেহের কোষকলাকে সুস্থ রাখে।
সাইকেল চালানোর উপকারিতা: নিয়মিত সাইকেল চালানো মাংসপেশির গঠন ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সাইকেল চালালে শরীরে বিপাকের হার বৃদ্ধি পায়। সাইকেল চালালে ওজন কমে দ্রুত; রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে; হƒদ্?রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে; রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় তা ক্যানসার ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে; ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে; মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়; চাপ, হতাশা, অবসাদ ও বিষণœতা কমে; হƒদ্?যন্ত্রের সহনশীলতা ও শ্বাসযন্ত্রের পেশির শক্তি বাড়ে; সমন্বয়ের দক্ষতা বৃদ্ধি করে; মাংসপেশির নমনীয়তা ও জয়েন্টের গতিশীলতা উন্নত হয়; হাড় মজবুত ও শক্তিশালী করে। নিয়মিত সাইকেল চালালে মনোযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের নিন্মাংশে পায়ের মাংসপেশি মজবুত হয়।
কয়েকটি নিয়ম মানতে হবে: সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক বাইক নির্বাচন। সিটের উচ্চতা, হ্যান্ডেলবার, পেডাল ও ক্লিটসের অ্যালাইমেন্ট যেন প্রত্যেক ব্যক্তির শরীরের মাপ অনুযায়ী আরামদায়ক হয়। সাইকেল চালানোর আগে অবশ্যই ওয়ার্মআপ এক্সারসাইজ করে নিতে হবে, যা আমাদের সাইকেল চালানোর ফলে সৃষ্ট আঘাত থেকে রক্ষা করবে। আঘাত অথবা অসুস্থতাজনিত কারণে সঠিক ফিটনেসে ফিরে আসতে চাইলে পর্যায়ক্রমে গতি বাড়ানো যেতে পারে। সাইকেল চালানোর নির্ধারিত লেন ব্যবহার করুন, ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। অবশ্যই হেলমেট ব্যবহার করবেন। সম্ভব হলে প্রতিদিন সাইকেল চালানো ভালো, অল্প কিছু সময় হলেও। একটু বিরতি দিন যদি ব্যথা অনুভূত হয়, কিংবা মাংসপেশি ফুলে যায়, বা অবসন্ন লাগে। যদি আপনি ফিটনেসের জন্য সাইকেল চালান, তাহলে সপ্তাহে এক দিন সাইকেল চালানো থেকে বিরত থেকে বিশ্রাম নিন। যদি কোনো আঘাত থাকে তবে পুরোপুরি সেরে না ওঠা পর্যন্ত সাইকেল চালানো থেকে বিরত থাকবেন। যাদের শারীরিক কোনো সমস্যা আছে, তাদের বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া সাপেক্ষে সাইকেল চালানো উচিত। ব্যস্ত রাস্তায় অথবা খারাপ আবহাওয়ায় যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে সাইকেল চালাতে হবে। উজ্জ্বল রঙের হেলমেট পরুন।
তাহমিনা সিদ্দিকা
কনসালট্যান্ট, ফিজিওথেরাপি