নিজস্ব প্রতিবেদক: পদত্যাগ করেছেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালকরা। সম্প্রতি কোম্পানির বোর্ড সভায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) বিনিয়োগকারীদের সম্মতিতে একজন পরিচালক ও দুজন নমিনি পরিচালক মনোনীত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির ষষ্ঠতম ইজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হয়।
জানা যায়, কোম্পানির পরিচালক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মাহমুদুল হাসান। ইউরোদেশ কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে দুজন নমিনি পরিচালক মনোনীত হয়েছেন। তারা হলেন নোমান রশিদ চৌধুরী ও নুরুদ্দিন আহম্মেদ। এছাড়া কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাহিদুল হককে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এমডিসহ স্বাধীন পরিচালকের পদ শূন্য রয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে নিয়োগ দেওয়া হবে।
ইজিএমে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আগে বিভিন্ন কারণে সুহৃদের বিনিয়োগকারীদের অনেক লোকসান হয়েছে, ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হয়েছে, আমরা আশা করছি আগের যে কাজগুলো হয়নি, সেগুলো সম্পন্ন করব এবং আগামীতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো কিছু করতে পারব।’
২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মো. আনিস আহমেদ ও পরিচালক হিসেবে ছিলেন সৈয়দা সায়মা আক্তার। তারা গত মঙ্গলবার কোম্পানির বোর্ড সভায় তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন নেই। তাই কোম্পানিটিকে বাঁচাতে এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছে ইউরোদেশ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইউরোদেশ কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড। সম্প্রতি উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনুমোদনের লক্ষ্যে আয়োজিত ইজিএমের এজেন্ডায় বলা হয়েছিল, কোম্পানিটির বর্তমান তিনজন শেয়ারধারী পরিচালক এবং দুই স্বতন্ত্র পরিচালকের পদত্যাগ অনুমোদন করা হবে। তার জায়গায় তিনজন নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। পাশাপাশি কোম্পানিটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদত্যাগ অনুমোদন করা হবে। এছাড়া কোম্পানিটির সংঘ স্মারক বিধি পরিবর্তনের অনুমোদন নেওয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় এ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের গাজীপুর কোনাবাড়ীতে স্থাপিত কারখানায় আমদানি বিকল্প ফার্মা গ্রেড পিভিসি শিট, প্লাস্টিক ডিসপোজিবল প্রোডাক্ট ও পিভিসি পাইপ উৎপাদন করা হতো। তবে কারখানায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন না থাকায় কারখানার মূল্যবান মেশিনারিজ নষ্ট হতে বসেছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি এক দশমিক ৬৪ টাকা মুনাফা করলেও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দশমিক তিন টাকা লোকসান করেছে। এ লোকসানের পরিমাণ বেড়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হয়েছে দশমিক চার টাকা।
‘জেড ক্যাটাগরিতে’ লেনদেন হওয়া সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের মোট শেয়ারের ৯০.৬৫ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে। আর উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে রয়েছে ৯.৩৫ শতাংশ শেয়ার।
Add Comment