নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইসির লেনদেনে সূচকের উত্থান পরিলক্ষিত হয়েছে। শেষ বেলায় ক্রয়চাপে উত্থান হলো পুঁজিবাজারে। দিনভর সূচকের টানাটানি থাকলেও শেষ সময়ে এসে হঠাৎ দ্রুত বাড়তে থাকে শেয়ারদর, উঠে যায় সূচক। গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরু থেকেই সূচকের টানাটানি দেখা দেয়। প্রথম এক ঘণ্টায় ১৫ পয়েন্টের পতন ঘটে। দরপতনের শঙ্কা কাটে পরের আড়াই ঘণ্টায়। সূচক বাড়ায় কিছুটা সস্তি বোধ করছে বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজার চাঙা করতে অর্থমন্ত্রীর নানা নির্দেশনার পরও বাজারে মন্দাভাবের প্রভাব কাটাতে পারছে না। বুধবার দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশে নামিয়ে আনার পর প্রথম কর্মদিবসে বাজারে কিছুটা উত্থান ঘটতে দেখা যায়। প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইসির সূচক বাড়ে ৫০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৩৮ পয়েন্ট।
গত রোববার ১১৫ পয়েন্ট মিলিয়ে আট কর্মদিবসে ৫৫৫ পয়েন্ট দরপতনের পর পুঁজিবাজার নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এই বৈঠকে তিনি বিএসইসির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি আইসিবির মাধ্যমে বিনিয়োগকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেন। এর পাশাপাশি মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের তহবিলের মেয়াদ ও আকার বাড়ানোর নির্দেশনা দেন।
পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে গত ৮ মার্চ এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনে। তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়টি বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা দিলেও পরে দেখা যায়, এটি লেনদেন কমে যাওয়ার একটি কারণ হিসেবে উঠে আসে। এরপর ২০ এপ্রিল দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের পর বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। লেনদেন বাড়তে থাকে।
বাজর বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিএসইসি দরপতন সীমা ২ শতাংশে করার পর প্রথম কর্মদিবসে এক দিনেই বাড়ছে ২৭৩টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ৬১টির আর দর অপরিবর্তিত ছিলো ৪০টির। লেনদেন শেষে হাতবদল হয় ৫৩৮ কোটি ৯১ লাখ ৮৯ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ৫১৩ কোটি ১১ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
চামড়া, সিরামিক, কাগজ ও প্রকাশনা, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ, পাট ও করপোরেট বন্ড খাতে সব কোম্পানির দরই বেড়েছে। প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ভালো দিন গেছে বস্ত্র, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, সাধারণ ও জীবন বিমা, ব্যাংক, আর্থিক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দরই।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাড ইমাম বাটন। এক যুগেও লভ্যাংশ দিতে না পারা কোম্পানিটি গতকাল ৬ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে লেনদেন শেষ হয় ৬৭ টাকা ৫০ পয়সায়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েল পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি উৎপাদন শুরু করেছে। তবে পুরোদমে উৎপাদনে যেতে আরও এক বছর সময় লাগবে। তবে সরকার ধানের কুঁড়ার তেলের উৎপাদনে জোর দেবেÑএমন একটি ঘোষণা আসার পর দাম বাড়ছে। কোম্পানিটি ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়ে লেনদেন শেষ হয় ৩৭ টাকা ৮০ পয়সায়।