নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সব মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এতে বাজারটিতে টানা দুই কার্যদিবসে মূল্যসূচক বাড়ল। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস কমার পর বাজারটিতে মূল্যসূচক বাড়ল।
এর আগে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়। এতে পাঁচদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা কমে যায়। চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে সোমবার বিক্রির চাপ কিছুটা কমে আসায় পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায়। ডিএসইতে বাড়ে সব মূল্যসূচক। এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় লেনদেনের আধা ঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি সব মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯২টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। লেনদেনের বেশিরভাগ সময়জুড়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল পরিমাণে ক্রয়াদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশের ঘর।
দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দেড় ডজন প্রতিষ্ঠান এমন দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ১৫০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সব মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে প্রায় হাজার কোটি টাকার কাছাকাটি চলে এসেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৭৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৪৪ কোটি ১৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৩৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑফু-ওয়াং ফুড, এনভয় টেক্সটাইল, আইটিসি, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ব্যাংক, ফরচুন সুজ এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২৭২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৬ লাখ টাকা।