নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনের পাশাপাশি লেনদেন কমে আড়াইশ কোটির নিচে নেমে এসেছে। তবে সূচকে ছিল মিশ্র প্রবণতা। প্রধান সূচক কমলেও ইতিবাচক ছিল ডিএসইএস ও ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। লেনদেনের শুরুতে সূচকের গতি বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করলেও তা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। ২০ মিনিটের মাথায় বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক প্রায় ৩০ পয়েন্ট নেমে যায়। এরপর ফের কেনার চাপ বাড়লে সূচক গতকালের সর্বোচ্চ চার হাজার ৪১৫ পয়েন্টে উঠে যায়। এরপর ধীরে ধীরে বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক নেমে যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রায় চার পয়েন্ট নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে। প্রধান দুই সূচক কমলেও সিএসআই ও সিএসই-৫০ সূচক ইতিবাচক ছিল।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স তিন দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য আট শতাংশ কমে চার হাজার ৩৯০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৯৮৫ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক এক দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৪৯৬ দশমিক ৪০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৩৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৩৯ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৬৩ কোটি ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৪ কোটি তিন লাখ টাকা। এদিন আট কোটি ৪৯ লাখ ৯ হাজার ৩৬০ শেয়ার ৮৫ হাজার ৮৪৬ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১৭৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬২টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর বেড়েছে তিন টাকা ৭০ পয়সা। এরপর খুলনা পাওয়ারের ৯ কোটি তিন লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৯০ পয়সা। ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আট কোটি ২৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২০ পয়সা। সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের ছয় কোটি ৮৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৮০ পয়সা। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ কোটি ৮৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা ৭০ পয়সা। এছাড়া কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের সোয়া পাঁচ কোটি, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের প্রায় পাঁচ কোটি, রিং শাইনের চার কোটি ৭৮ লাখ, ইউনাইটেড পাওয়ারের চার কোটি ৬০ লাখ ও স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের সাড়ে চার কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে আনলিমা ইয়ার্ন। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার। দর বেড়েছে সাত দশমিক ৬৬ শতাংশ। বিডি অটোকারের ছয় দশমিক ২৬ শতাংশ, জিকিউ বলপেনের সাড়ে পাঁচ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের চার দশমিক ৬০ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের চার দশমিক ৪১ শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের চার দশমিক ২৩ শতাংশ, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের চার দশমিক ২৩ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ডের চার শতাংশ ও হা-ওয়েল টেক্সটাইলের দর তিন দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া আট দশমিক ৮৯ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে সমতা লেদার। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের আট দশমিক ১০ শতাংশ, প্রগ্রেসিভ লাইফের সাত দশমিক ৮০ শতাংশ, পদ্মা লাইফের ছয় দশমিক ৯৫ শতাংশ, এমারাল্ড অয়েলের ছয় দশমিক ৭১ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের সোয়া ছয় শতাংশ, সিএনএ টেক্সের সোয়া পাঁচ শতাংশ, আজিজ পাইপসের চার দশমিক ৯০ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের চার দশমিক ৮১ শতাংশ ও সোনালী আঁশের দর চার দশমিক ৭৯ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক সাত দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে আট হাজার ১০৫ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য আট শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৩৭২ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩০ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ১১৭টির, অপরিবর্তিত ছিল ৬৭টির দর।
সিএসইতে এ-দিন সাত কোটি ৬৩ লাখ ছয় হাজার ৯১৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে আরএসআরএম স্টিল।কোম্পানিটির ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা স্কয়ার ফার্মার সাড়ে ৩২ লাখ, ডরিন পাওয়ারের সাড়ে ২৯ লাখ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২৯ লাখ, খুলনা পাওয়ারের ২৯ লাখ, আইপিডিসির সাড়ে ২৬ লাখ, বেক্সিমকোর ১৯ লাখ ও যমুনা ব্যাংকের ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।