সূচকে বড় ধাক্কা রবি বিএটিবিসির, ট্যানারি খাতের বড় উত্থান

মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকালও সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। কমেছে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ। খাতভিত্তিক লেনদেনে বড় লাফে শীর্ষে উঠে এসেছে ট্যানারি খাত। আর সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে রবি ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেড।

লেনদেন বিশ্লেষণ ও পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রচণ্ড বিক্রয় চাপের কারণে গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ২৩ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং এই বিক্রয় চাপের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে বেছে বেছে সম্ভাবনাময় স্টকগুলোয় বিনিয়োগের সুযোগ নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

গতকালের লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল ট্যানারি খাত। এক দিনে খাতটির লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে লেনদেনে হয়েছে এক হাজার ২৩১ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। আগের দিনের চেয়ে যা ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা কম। এর মধ্যে শুধু ট্যানারি খাতে লেনদেন হয়েছে ২৬৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে খাতটিতে লেনদেন হয়েছিল ছয় দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ খাতের চারটি বা ৬৬ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর বৃদ্ধি দেখা গেছে। বিপরীতে দর কমেছে দুইটি কোম্পানির।

লেনদেনে পরের অবস্থানে থাকা খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১১ দশমিক ৫২, প্রকৌশল ৯ দশমিক ৮০, বস্ত্র আট দশমিক ৬৮, বিবিধ আট দশমিক ১৭, খাদ্য সাত দশমিক ৫৯ ও ব্যাংক খাতে পাঁচ দশমিক ৩২ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল।

তবে শীর্ষে ছয় খাতে তেমন একটা দরবৃদ্ধি দেখা যায়নি। বিক্রয় চাপের কারণে উল্টো দর পতনের সাক্ষী হয়েছে খাতগুলো। ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৪৬ শতাংশের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৪৩ শতাংশের দর পতন হয়েছে। প্রকৌশল খাতে ৫৭ শতাংশের দর পতন হয়েছে। তবে বস্ত্র খাতে ভালো রিটার্ন পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। খাতটির ৪২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, কমেছে ৩৮ শতাংশের ও ১৮ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ার আগের দামে হাতবদল হয়েছে।

এছাড়া বিবিধ খাতে ৫৩, খাদ্য খাতে ৫৭ ও ব্যাংক খাতে ৭৫ শতাংশের বেশি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। তবে এদিন দর হারানোর শীর্ষে ছিল আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ বিমা খাত। খাত দুইটিতে ৯০ শতাংশ করে কোম্পানির দর পতন হয়েছে। এছাড়া জীবন বিমা খাতেও ৭৬ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর পতন হয়েছে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩৭৯টি কোম্পানি। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ২২১টির এবং দর ধরে রাখতে পেরেছে ৪৬টি কোম্পানি। সিংহভাগ সিকিউরিটিজের দর পতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে সাত হাজার ৩৬ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস৩০ সূচক হ্রাস পেয়েছে ৭ পয়েন্ট। এদিকে শূন্য দশমিক ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে শরীয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক ডিএসইএস।

গতকাল ডিএসইর সূচক পতনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছে রবি ও ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো লিমিটেড। কোম্পানি দুটি যৌথভাবে সূচক কমিয়েছে ৩১ দশমিক ১২ পয়েন্ট। এর মধ্যে রবির শেয়ার দর ২ দশমিক ০৮ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ১৮ দশমিক ০৮ পয়েন্ট। আর ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ মূল্য হ্রাসে সূচক কমেছে ১৩ দশমিক ০৪ পয়েন্ট।

এছাড়া ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, বেক্সিমকো, আইএফআইসি ব্যাংক, এমজেএল বাংলাদেশ, জেনেক্স ইনফোসিস, ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ও গ্রিন ডেলটা সূচক পতনে বেশি ভূমিকা রেখেছে। সব মিলিয়ে এই দশ কোম্পানির কারণে সূচক হারিয়েছে ৫৬ দশমিক ১৮ পয়েন্ট।

বিপরীতে ওয়ালটন হাইটেক এককভাবে সূচক টেনে তুলেছে ৫১ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট। কোম্পানিটির ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধিতে সূচকে এই পয়েন্ট যোগ হয়েছে। এছাড়া সূচক বাড়িয়েছে তিতাস গ্যাস, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, খুলনা পাওয়ার, বিকন ফার্মা, গ্রামীণফোন, বার্জার পেইন্টস, রেনাটা, স্কয়ার ফার্মা ও র‌্যাক সিরামিকস লিমিটেড। এই দশ কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৭১ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০