সূচক দিয়ে বোকা বানানোর দিন শেষ

 

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

কৌশলগত অংশীদার আসলে আমাদের পুঁজিবাজার প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নত হবে। বাজারে স্বচ্ছতা আসবে এবং সবদিক থেকেই বাজারের মান বাড়বে। পুঁজিবাজারের সূচক নিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর দিন শেষ। এখন মানুষ বাজারে লেনদেন কত হয়েছে সেটি দেখতে চায়, সূচক নয়। এখন সবাই জানে যে, সাজানো লেনদেন করে পুঁজিবাজারকে কৃত্রিমভাবে বাড়ানো যায় এবং আর্থিক প্রতিবেদনে অস্বচ্ছতার ব্যাপারেও তারা এখন সচেতন। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খূজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সিইও মো. সালেহ আহমেদ এবং এনবিইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।

মো. সালেহ আহমেদ বলেন, গত অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই পুঁজিবাজার নিম্নমুখী প্রবণতায় আছে। সে সময় বাজার পতনের গতি কম ছিল। কিন্তু এক্সপোজার সীমা অতিক্রম করাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এডি রেশিও কমানোর ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল। আর মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় থেকে বাজার পতনের গতিবেগ বাড়তে শুরু করে। পাশাপাশি স্ট্রাটেজিক পার্টনার বাছাই নিয়ে এসইসি ও ডিএসইর মধ্যে  টানাপড়েনের কারণে বাজার আরও বেশি গতিতে পড়ছে। স্ট্রাটেজিক পার্টনার হয়তো বাজারের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে। কিন্তু এটিকে কেন্দ্র করে বাজার পতনের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাই না। লক্ষ্য করলে দেখবেন, এ এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সূচক ৫০০-৬০০ পয়েন্টের মতো পড়েছে যেটি সবার কাছেই অপ্রত্যাশিত। তাছাড়া কিছু ব্যাংকের এক্সপোজার বেশি হয়ে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি গণহারে না বলে বিশেষ ওই ব্যাংকগুলোকেই শুধু এক্সপোজার সীমায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিত তাহলে হয়তো এর প্রভাব এতটা পড়তো না। সম্প্র্রতি ডিএসইর নির্বাহী পরিচালকরা সংবাদ সম্মেলন ডেকে সেখানে তিনি কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। যার ফলে গতকাল বাজার একটু ইতিবাচক অবস্থায় গেছে। আশা করি সামনে বাজার ভালো হবে।

সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বলেন, স্ট্রাটেজিক পার্টনার আসলে আমাদের প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে, বাজারে স্বচ্ছতা আসবে এবং সবদিক থেকেই বাজারের মান বাড়বে। কিন্তু যখন আমাদের বায়াররা শুনছে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্বাচনে কম যোগ্যতা সম্পন্নদের বিষয়ে অনৈতিক একটা চাপ আসছে তখন এটার একটা নেতিবাচক  প্রভাব বাজারে পড়েছে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের সূচক নিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর দিন শেষ। এখন মানুষ বাজারে লেনদেন কত হয়েছে সেটি দেখতে চায়। সূচক নয়। এখন সবাই জানে যে, সাজানো লেনদেন করে পুঁজিবাজারকে কৃত্রিমভাবে বাড়ানো যায় এবং আর্থিক প্রতিবেদনে অস্বচ্ছতার ব্যাপারেও তারা এখন সচেতন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যাংক খাতে ব্যাপক কেলেঙ্কারি লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং এই খাতে অনেক দুর্নীতি হচ্ছে। সম্প্রতি দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল সাহেব বলেছেন, যারা এ সব দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা যত সহজ, করা তত কঠিন। অন্য দিকে অর্থমন্ত্রীও অনেক সময় বলেছেন যে, পুঁজিবাজারে যারা অপরাধী তাদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার এ দুটি খাতের ওপর থেকে জনগণের আস্থা সম্পূর্ণভাবে চলে গেছে। বাজার নিয়ন্ত্রকরা শুধু সংবাদ সম্মেলন ডেকে আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে মনে হয় না।

 

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০