সূচক হ্রাস-বৃদ্ধির মাত্রা থাকা উচিত

সূচক হ্রাস-বৃদ্ধির মাত্রা থাকা উচিত। সূচকের হ্রাস-বৃদ্ধি হবে এটাই বাজারের ধর্ম। কিন্তু বর্তমানে সে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। একদিকে শেয়ারদর পতন হচ্ছে, অন্যদিকে সূচক কমছে। কমছে লেনদেনও। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাজার পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।

হাসিব হাসানে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ভ্যাট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. নূরুল আজহার।

কাজী আজিজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের সূচক হ্রাস-বৃদ্ধি করবে এটাই বাজারের ধর্ম। কিন্তু তার একটি মাত্রা থাকা উচিত। বাজারের উঠা-নামার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। একদিকে সূচক কমছে, অন্যদিকে টার্নওভার এবং শেয়ারদর কমেই যাচ্ছে। যদি বাজারের এ রকম অবস্থা বিরাজ করে সেক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতির জন্য এটি ভালো হবে না। আবার দেশের অর্থনীতিতে বড় একটি বিষয় হচ্ছে রফতানি খাত। গত তিন মাসে রফতানি খাতে যে সূচক দেখা গেছে তা মোটেই ভালো নয়। আবার দেশের প্রায় ৪০টি বস্ত্র খাতের কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। আরও বন্ধের আশঙ্কা রয়েছে।

ড. মো. নুরুল আজহার বলেন, পুঁজিবাজার তার নিজস্ব গতিতে চলবে। বাজার তার নিজস্ব গতিতে দেখা যাচ্ছে না। বাজারে এখনও কারসাজি বিরাজমান। আবার বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য অনেক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না বাজারের পতন। তাই প্রণোদনা ও ব্যাংক খাতের কোম্পানি দিয়ে বাজার ভালো করা যাবে না। বাজার ভালো করতে হলে বহুজাতিক কোম্পানি আনতে হবে। পাঁচ বছর আগে সরকার ঘোষণা দিয়েছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি কোম্পানি বাজারে আনা হবে। এখন পর্যন্ত তার কোনো একটি কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। আবার অনেক কোম্পানি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বাজারে আসতে পারছে না। পুঁজিবাজারে একটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে পাঁচ থেকে ছয় বছর লেগে যায়। কথা হচ্ছে কেন পাঁচ থেকে ছয় বছর লাগবে। কারণ তাদের অদক্ষতা, অস্বচ্ছতা এবং নীতিপরায়নহীনতার কারণে এসব ঘটছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৪ সালে। ১৯৯৬, ২০০৯ এবং ২০১০ সালে বাজারধস হয়। গত ১০ বছরে বাজার এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ২০১০ সালে যাদের কারণে বাজারধস হয়েছিল। এ বিষয়ে ইব্রাহিম খালেদ ওইসব ব্যক্তিদের তালিকা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন। এখন পর্যন্ত তাদের কারও শাস্তি হয়নি। কিন্তু যারা ছিল তারা রাঘববোয়াল। তারাই এখন বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশের জিডিপির আকার ঠিকই বাড়ছে। কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় কারসাজির চেষ্টা চলছে। কীভাবে লুটপাট করা যায় সে বিষয়ে সর্বক্ষণ তৎপর থাকে। পুঁজিবাজারের কিছু হলেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়। কিন্তু পুঁজিবাজার দেখভাল করার জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে যদি সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বানানো হয়েছে কেন?

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০