নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে সেচ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন ও পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারে বর্তমান সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। গত ১২ বছরে সেচ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ নেয়ার ফলে দেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) অডিটোরিয়ামে ‘ক্ষুদ্র সেচের টেকসই উন্নয়নে অনলাইনভিত্তিক জরিপ ও পরিবীক্ষণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএডিসি ‘ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়নে জরিপ ও পরিবীক্ষণ ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পের’ আওতায় এ সেমিনারের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, পানি একটি অমূল্য সম্পদ। খাদ্য নিরাপত্তা ও ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেচকাজসহ নানাভাবে পানির অপচয় হয়। এটি আরও কমিয়ে আনতে হবে।
সরকার সেচকাজে আধুনিক প্রযুক্তির রাবার বা হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম ও নানা ধরনের সেচ অবকাঠামো নির্মাণ, ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইন নির্মাণ, পানিসাশ্রয়ী সেচ পদ্ধতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তির ব্যবহার এবং ভূ-উপরিস্থ পানির জলাধার তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, পানি ব্যবস্থাপনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে খাল, নদী খনন, পুনঃখনন, বাঁধ নির্মাণ প্রভৃতি কাজের সময় কৃষি উৎপাদনের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিতে হবে। সেজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করতে হবে।
বিএডিসির তথ্যে জানা যায়, সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের নানা পদক্ষেপের ফলে ২০২১ সালে সেচ এলাকা ৫৬ দশমিক ২৭ লাখ হেক্টরে, সেচ দক্ষতা ৩৫ থেকে ৩৮ শতাংশ ও ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ২১ থেকে ২৭ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। সেচযোগ্য জমির ৭৩ শতাংশ সেচের আওতায় এসেছে। ১৯৮০ সালে সারাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির সেচ ২০ শতাংশ ও ভূ-উপরিস্থ পানির সেচ ৮০ শতাংশ ছিল। সেখানে ২০১০ সালে ভূগর্ভস্থ পানির সেচ ৮০ শতাংশ এবং ভূ-উপরিস্থ পানির সেচ ২০ শতাংশে পরিণত হয়।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম। বিএডিসির চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহর সভাপতিত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের উপদেষ্টা ড. আইনুন নিশাত, সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান ও বিএডিসির সদস্য পরিচালক (ক্ষুদ্রসেচ) প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হক বক্তৃতা দেন।