নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরের এক হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সমুদ্রসম্পদ টেকসই আহরণের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন শাখা-২ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
উপসচিব দীপক কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বঙ্গোপসাগরের এক হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ এলাকার ৭০ মিটার গভীর পর্যন্ত সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সীমানায় উত্তরে বঙ্গোপসাগর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক জলসীমা এবং পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর এলাকা রয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী বৈশ্বিকভাবে হুমকির মুখে থাকা প্রবাল, গোলাপি ডলফিন, হাঙ্গর, রে ফিস, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক পাখি, সামুদ্রিক ঘাস, জীববৈচিত্র্য এবং এদের আবাসস্থল সংরক্ষণসহ সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মান উন্নয়ন, ব্লু ইকোনমি সমৃদ্ধকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-১৪) অর্জনে এই পরিমাণ এলাকা সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সাগরের বুকে বাংলাদেশ সীমানায় রয়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অবস্থিত সেন্টমার্টিনের আয়তন আট দশমিক তিন বর্গকিলোমিটার। দ্বীপটি সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া এখানে একসময় ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি-জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৪৩ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, পাঁচ প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল। এসব প্রাণীর অনেকগুলোই এখন বিলুপ্তির পথে।
উল্লেখ্য, এখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিনের ৫৯০ হেক্টর এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছিল সরকার। কিন্তু দিন দিন মানুষের বসতি বৃদ্ধি ও পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে থাকায় তা বেশিদিন টেকেনি।