সেন্ট্রাল ফার্মার এমডি ও পরিচালককে জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে জালিয়াতির মাধ্যমে নিরীক্ষকের আপত্তির তথ্য গোপন করে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস। এর মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদনকে ‘আপত্তিমুক্ত’ করে বিনিয়োগকারীদের সামনে উপস্থাপনের অভিযোগে সেন্ট্রাল ফার্মাকে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রত্যেক পরিচালককে চার লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির গতকাল অনুষ্ঠিত ৬৬৭তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তথ্যমতে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের গত বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরের নিরীক্ষা করে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান ‘জোহা জামান কবির রশিদ অ্যান্ড কোং’। ওই প্রতিবেদনে স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ, মন্দ ঋণ ও দায়ের বিপরীতে প্রভিশন না রাখাসহ পাঁচ বিষয়ে আপত্তি তুলেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু কোম্পানিটির প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব আপত্তির তথ্য নেই। উপরন্তু আয়-সম্পদ-মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে কোম্পানিটি। আর এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি প্রতিবেদনে।
এ বিষয়ে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর দৈনিক শেয়ার বিজে ‘কারসাজি করে সম্পদ-মুনাফা বাড়িয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মা’ শীর্ষক প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে নিরীক্ষকের আপত্তির তথ্য গোপন করে সম্পদ-মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোর বিষয়টি উঠে এসেছে। সংবাদ প্রকাশের প্রায় এক বছর পর কোম্পানিটিকে জরিমানা করা হলো।
বিএসইসির কমিশন সভায়, সেন্ট্রাল ফার্মার স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালক ছাড়া প্রত্যেক পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চার লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সেসঙ্গে বিদ্যমান আইন লঙ্ঘনের সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ওই পরিচালকরা কোনো লভ্যাংশ, পারিতোষিক বা অন্য কোনো সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যবসা করা ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানি গ্যাটকো ও বাংলা ক্যাটের হাত ধরে আশির দশকে সেন্ট্রাল ফার্মার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে অন্য ব্যবসায় যুক্ত হয়ে ১৯৯৩ সালে স্থানীয় মেট্রো গ্রুপের কাছে কোম্পানিটির মালিকানা হস্তান্তর করে গ্যাটকো। এরপর পুরোনো যন্ত্রপাতির সঙ্গে নতুন যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৯৯৪ সালে মেট্রো গ্রুপের অধীন নতুন করে উৎপাদনে আসে কোম্পানিটি। তবে কয়েক বছর পরই মনসুর আহমেদের কাছে সম্পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তর করে দেয় মেট্রো গ্রুপ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আলিফ গ্রুপের কাছে সেন্ট্রাল ফার্মার মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। মালিকানা বদলের খবরে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়লেও শেষ মুহূর্তে এসে চুক্তিটি বাতিল হয়েছে।