Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 6:16 pm

সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ১১৭৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ২৬ লাখের বেশি নতুন গ্রাহক যুক্ত হলেও লেনদেনে সামান্য ছন্দপতন হয়েছে। এ মাসে মোট লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা, যা আগের মাস থেকে ১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা বা প্রায় ১ শতাংশ কম। আগস্টে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে মোট লেনদেন কমলেও দৈনিক লেনদেন বেড়েছে। এ মাসে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৩ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। দৈনিক লেনদেন বৃদ্ধির পরও মোট লেনদেন কমার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরের ব্যাপ্তি ১ দিন কম হওয়ায় মোট লেনদেন কমেছে।

বাংলাদেশে ২০১১ সালের মার্চে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ বিভিন্ন নামে ১৩টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, গত সেপ্টেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজারে। এক মাস আগেও যা ছিল ২১ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার। ফলে এক মাসের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৬ লাখ ২৭ হাজার জন। যদিও মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকের বড় অংশই নিয়মিত লেনদেন করছেন না। ফলে এ সেবায় নিষ্ক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যার সংখ্যা এখন ১৪ কোটি ১২ লাখ ১ হাজার। বাকি ৭ কোটি ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার সক্রিয় গ্রাহক সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদিন লেনদেন করেছেন ৩ হাজার ৬১৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের মাস আগস্টে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। আর মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো হিসাবে টানা তিন মাস কোনো ধরনের লেনদেন না হলে তা নিষ্ক্রিয় হিসাব বিবেচিত হয়। আর তিন মাসের মধ্যে একটি লেনদেন হলে তা সক্রিয় হিসেবে বিবেচিত।

শুধু অর্থ পাঠানোই নয়, অনেক নতুন সেবাও মিলছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা বিতরণ ও বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোসহ (রেমিট্যান্স) বিভিন্ন সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় টাকা জমা পড়ে (ক্যাশ ইন) ৩৪ হাজার ৯৫৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর ২৯ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) হয়। এ মাসে কেনাকাটার বিল পরিশোধ হয় ৪ হাজার ৮৮৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে ব্যক্তির হিসাব থেকে আরেক ব্যক্তির হিসেবে ৩০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা পাঠানো হয়। এছাড়া কর্মীদের বেতন-ভাতা দেয়া হয় ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ হয় ৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকার। রেমিট্যান্স এসেছে ৫২০ কোটি টাকার। এছাড়া সরকারি পরিশোধ হয়েছে ৩৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার।