শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : রমজানের রোজা শেষে ইফতার আর ঈদের দিনে খাবারের সু-স্বাদু উপাদেয় সেমাই। আর দোকানে সে সেমাই রাখার জন্য ব্যবহার হয় বাঁশের খাঁচা। এসব খাঁচা তৈরিতে বেশ পটু জয়পুরহাটের মাহালী সম্প্রদায়। ঈদ সামনে রেখে এখন খাঁচা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এ সম্প্রদায়ের লোকেরা।
সারা বছর তেমন তাদের কাজ না থাকলেও এ এক মাস তাদের দম ফেলানোর সময় থাকে না। সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে কুটির শিল্পের এ কারিগররাও নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নসহ জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবেন বলে মনে করেন এখানকার সচেতন মহল।
জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক মাহালী পরিবার। বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র বানিয়ে বিক্রি করে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। তবে রমজান এলেই বেড়ে যায় তাদের কাজের পরিধি। সেমাই
তৈরির খাঁচা বানাতে দিন-রাত অবিরাম চলে তাদের হাত।
খাঁচা তৈরি কারিগর জয়পুরহাট সদর উপজেলার খঞ্জনপুরের নিখিল চন্দ্র, পাঁচবিবি উপজেলার উচায়ের অমিত মণ্ডল, ক্ষেতলাল দাশরা শিকর চন্দ্রসহ বেশ কয়েকজন জানান, বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় তেমন মুনাফা থাকছে না তাদের। খাঁচা তৈরি বাপ-দাদার পেশা বলে এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন এ কাজ। তবে ঈদ আসলে খাঁচার চাহিদা রেড়ে যায়। বেড়ে যায় লাভের পরিমাণও। যা দিয়ে পরবর্তী দু-এক মাস সংসার চালনো যায়।
বছরে একবার সেমাই রাখার বাঁশের খাঁচা যেমন মাহালী সম্প্রদায়ের দরিদ্র মানুষগুলোর জন্য আশির্বাদ, তেমনই এ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মৌসুমি খাঁচি ব্যবসায়ীদের বেড়ে যায় আনাগোনা। ব্যবসায়ীরা জয়পুরহাটের তৈরি এ সেমাই রাখার খাঁচি নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী, দিনাজপুরসহ অনেক জেলায় খাঁচা পাঠাচ্ছি। ভালো লাভও হয় বলে জানালেন খাঁচা ব্যবসায়ীরা।
জয়পুরহাট বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উপ-ব্যবস্থাপক আকতারুল আলম চৌধুরী জানান, সরকারি সহায়তা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে মাহালী সম্প্রদায়ের দরিদ্র মানুষগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাঁশের খাঁচাসহ বাড়িঘরের নানা আসবাবপত্র তৈরি ও বিক্রি করে টিকে আছেন। ভবিষ্যতে ঋণ সহায়তা ছাড়াও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও জানান বিসিক উপব্যবস্থাপক।
সেমাইয়ের খাঁচা তৈরিতে ব্যস্ত জয়পুরহাটে মাহালী সম্প্রদায়
