Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 9:44 pm

সেলাইয়ের স্থানে হার্নিয়া প্রতিরোধের উপায়

শরীরের কোনো গঠনগত দুর্বল অংশ দিয়ে যদি ভেতরের কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অংশ বেরিয়ে আসে, তাকে বলা হয় হার্নিয়া। বড় কোনো অস্ত্রোপচারের পর সেই ক্ষতস্থান বা সেলাইয়ের জায়গাটা বেশ কিছুদিন পর্যন্ত দুর্বল থাকে। যদি এই দুর্বল ফাঁক দিয়ে কোনো কিছু বেরিয়ে আসে, তাকে বলা হয় ইনসিশনাল হার্নিয়া।

অস্ত্রোপচারের ধকলের সঙ্গে হার্নিয়া হলে তা অনেক ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর জন্য আবার অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে।

হার্নিয়া হওয়ার পেছনে অস্ত্রোপচারজনিত কিছু কারণ থাকে হয়তো, যা এড়ানোর উপায় নেই। ইনসিশনাল হার্নিয়া হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, পেটের ভেতর চাপ বেড়ে যাওয়া, মাংসপেশির দুর্বলতা আর ক্ষতস্থানে সংক্রমণ। তাই যেসব কারণে এগুলো হতে পারে, সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

করণীয়: অস্ত্রোপচারের পর কোষ্ঠকাঠিন্য, দীর্ঘমেয়াদি সর্দি-কাশি, ভারী কাজ করা বা জোরে চাপ দিয়ে প্রস্রাব-পায়খানা প্রভৃতি হলে পেটের মধ্যকার চাপ বাড়বে। চাপ বাড়লে হার্নিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যারা ধূমপান করেন, তাদের অস্ত্রোপচারের আগে থেকে সেটা বন্ধ রাখতে হবে, যাতে কাশি না হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও আঁশযুক্ত খাবার খাবেন। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। আর মাংসপেশির দুর্বলতার কারণ হলো স্থ‚লতা আর পর্যাপ্ত ব্যায়াম না করা। তাই অস্ত্রোপচারের আগে থেকে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরানোর চেষ্টা করতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর শুয়ে-বসে থেকে অনেকের ওজন বেড়ে যায়।

অস্ত্রোপচারের আগে-পরে অবশ্যই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। এ ছাড়া সঠিক মাত্রায় ওষুধ সেবন করা, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং ক্ষতস্থানের যথাযথ যতœ নেয়া হলে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে। ডিম কিংবা লেবুর শরবত ঘা শুকাতে কার্যকর ভ‚মিকা রাখে। খাদ্যাভ্যাসে প্রোটিন, ভিটামিন সি ও জিংক ক্ষতস্থান দ্রæত সারায়।

লক্ষ করুন: সবচেয়ে বেশি ইনসিশনাল হার্নিয়া হয় সিজারিয়ান সেকশনের পর। এ সময় শারীরিক গঠন অনেকটাই পাল্টে যায়। পেট ভারী থাকে। তাই অস্ত্রোপচারের পর ক্ষতস্থানের ওপর চাপ কমাতে এবডোমিনাল বাইন্ডার বা বেল্ট ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ছাড়া পেটের অস্ত্রোপচারের পর ভারী জিনিস উত্তোলন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত বিরত থাকা উত্তম।

ডা. রেজা আহমদ

কনসালট্যান্ট সার্জন, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সিলেট