মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দেশের সব ভোটার স্মার্টকার্ডের (ভোটার আইডি) আওতায় আসবেনÑএমন ঘোষণা থাকলেও নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় এখনও ৬৬ হাজার ১৫৬ ভোটার স্মার্টকার্ডের আওতার বাইরে রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ৮১৭ ভোটারের স্মার্টকার্ড স্থানীয় নির্বাচন দপ্তরে রক্ষিত রয়েছে। আর ২৭ হাজার ৩৪৯ ভোটারের স্মার্টকার্ড এখনও আসেনি। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া ২৩ হাজার ২৮ ভোটার এখনও অ্যানালগ কার্ড (ভোটার আইডি) নিয়ে অ্যানালগ অবস্থায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে চার হাজার ৩২১ জন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন।
স্মার্টকার্ড না পাওয়া পুরোনো আইডি কার্ড ব্যবহার করা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এখনও অ্যানালগেই থেকে গেলাম। নির্বাচন কমিশনের দয়া হলে ডিজিটাল হব! কিন্তু কবে?
স্থানীয় নির্বাচন অফিসের সূত্র জানায়, তাদের দপ্তরে রাখা বিপুলসংখ্যক স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিদিন দু-একজন করে ভোটার তাদের স্মার্টকার্ড নিয়ে গেলেও অধিকাংশ ভোটারদের মাঝে কার্ড সংগ্রহে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় নির্বাচন দপ্তরের পক্ষ থেকে কার্ড সংগ্রহে বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হলেও তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে সেগুলো স্তূপ আকারে পড়ে রয়েছে দপ্তরটির গোডাউনে।
সূত্র জানায়, সৈয়দপুর উপজেলায় সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী মোট ভোটার দুই লাখ সাত হাজার ৮৩৫ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ পাঁচ হাজার ২০৪ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ দুই হাজার ৬৩১ জন।
নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় সৈয়দপুরে স্মার্টকার্ড ইস্যু হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮৬ জন ভোটারের। বিতরণ করা হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৬৬৯ জনের মাঝে। বাকি ৩৮ হাজার ৮১৭ ভোটারের কার্ড এখনও বিতরণ করা হয়নি (স্থানীয় নির্বাচন অফিসের হিসাব অনুযায়ী) ওইসব স্মার্টকার্ডের ভোটাররা না আসায় এসব কার্ড পড়ে রয়েছে নির্বাচন দপ্তরে।
অপরদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে সৈয়দপুরে ২৭ হাজার ৩৪৯ ভোটারের স্মার্টকার্ড এখনও আসেনি। এর মধ্যে গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে স্মার্টকার্ড না আসা ২৩ হাজার ২৮টিসহ সর্বশেষ হালনাগাদে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় চার হাজার ৩২১ জনের স্মার্টকার্ড রয়েছে।
স্থানীয় নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের ২৩ হাজার ২৮ ভোটারের স্মার্টকার্ড কবে আসবে, তা বলা যাচ্ছে না। তবে সর্বশেষ হালনাগাদে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া চার হাজার ৩২১ জনের কার্ড খুব শিগগির চলে আসবে। তবে বাদ পড়া ভোটারের স্মার্টকাডের্র চাহিদা দিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেয়া হয়েছে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. রবিউল আলম জানান, দপ্তরে জমা হয়ে থাকা স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। তবে কার্ড নিতে আসা ভোটারদের সংখ্যা খুবই কম। আগে যাদের কার্ড আসেনি, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু জটিলতার কারণে প্রিন্ট না হওয়া তাদের স্মার্টকার্ড আসেনি। কবে নাগাদ এসব কার্ড আসতে পারে তা জানাতে না পারলেও তিনি বলেন, যেসব ভোটার স্মার্টকার্ড পাননি তারাও আগামী সব নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে পুরোনো আইডি কার্ড বৈধ হিসেবে গ্রহণ করা হবে।