Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 9:04 pm

সৈয়দপুর পৌর শহরে অধিকাংশ রাস্তাই বেহাল,চলাচলে ভোগান্তি

প্রতিনিধি,নীলফামারী: প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার সিংহভাগ সড়কজুড়ে খানাখন্দে বেহাল, চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পৌরবাসী। সেই সাথে পাড়ায় মহল্লায় আবর্জনার স্তুপের পচা গন্ধে নাজেহাল জনজীবন। সেবা পাওয়াতো দুরের কথা, দীর্ঘ দিন থেকে এই অসহনীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর শহরের। সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা এর দায়ভার এড়িয়ে যাচ্ছে।

শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোর ছোট বড় খানাখন্দে ৮০ ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা। যার দৈর্ঘ প্রায় ৮-৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে শেরে বাংলা সড়কের তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এবং শহীদ জহুরুল হক সড়ক হয়ে মিস্ত্রিপাড়া বসুনিয়া মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও, রেলওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে রেলওয়ে কারখানা হয়ে মিস্ত্রিপাড়া পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কেরও দুরাবস্থা। এই সড়কগুলোতে বড় বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পায়ে হেটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যানবাহন নিয়ে চলতে গেলেই দূর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা করছেন নগরবাসী।
দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবত এই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দুর্ভোগ লাঘবে কারও কোন নেই উদ্যোগ। ফলে চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে সৈয়দপুর পৌরবাসী। এছাড়াও পৌর শহরের পাড়া মহল্লার সকল রাস্তার শতকরা ৮০ ভাগ কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
অন্যদিকে, শহরের প্রধান মোড়গুলোতে যানজটে নাকাল সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, শহীদ জহুরুল হক সড়ক, শেরে বাংলা সড়ক, শহীদ ক্যাপ্টেন মৃধা সামসুল হক সড়ক ((বিমানবন্দর সড়ক), শহীদ তুলশিরাম সড়ক (দিনাজপুর রোড) ও বঙ্গবন্ধু সড়ক (রংপুর রোড) জুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ যানজটে নাকাল পথযাত্রী ও ভ্যানচালক, রিকশা চালক, ক্ষুদ্র যান চালকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সংবাদকর্মী বলেন, মুল সড়কের ফুটপাত দখল করে বসে আছে স্থানীয় ব্যবসায়িরা। দিনের বেলা দূরপাল্লার ভারি যানবাহন শহরে প্রবেশ করে যানজোটের সৃষ্টি হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের নেই কোন ভুমিকা। ফলে সব সময় যানজট লেগেই আছে মুল শহরে।
অভিযোগ রয়েছে ওইসব দোকান, অটোরিক্সা ও ভারি যানবাহন থেকে অর্থ (চাঁদা) আদায় করার বিনিময়ে নিয়মে পরিনত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে শহরের দিন দিন এই দূর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পাড়ায় মহল্লায় ময়লার ভাগার জমেছে। সেই সাথে ড্রেনে ময়লা আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এতে যেমন শহরজুড়ে দূর্গন্ধময় ময়লার ভাগার গড়ে উঠেছে, তেমনি সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি উপচে রাস্তাসহ বাসা বাড়ি ও দোকানে ঢুকে পড়ছে।

এমনকি সামান্য বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আর আবর্জনার দূর্গন্ধে পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটছে। আর এতে মশা ও মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে জনজীবন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ফলে প্রথম শ্রেণীর এই পৌরসভা এখন বসবাস অযোগ্য হওয়ার পথে।

এসব বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী জানান, যানজট নিরসনে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করো হয়েছে। শহরের অংশীজনদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আশা করা যায়, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যা দূর করতে আমরা সফল হবো।