নিজস্ব প্রতিবেদক: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, নেপাল বাংলাদেশের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র। নেপালের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের জন্য কাজ চলছে। উভয় দেশ এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা দিচ্ছে। উভয় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সড়ক, নৌ ও আকাশপথ চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে। নেপাল সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে।
গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে সফররত নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদ্বীপ কুমার গায়ওয়ালীর সঙ্গে টিপু মুনশির মতবিনিময় হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে নেপালের। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ নেপালে ৩৮ দশমিক ০৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮ দশমিক ১৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পাটজাত পণ্য, ব্যাটারি, তৈরি পোশাক, টয়লেট্রিজ পণ্য, ওষুধসহ বেশ কিছু পণ্য নেপালে রপ্তানি করছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব।
টিপু মুনশি বলেন, নেপালের সঙ্গে বাণিজ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আগামী ৩ ও ৪ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এফটিএ স্বাক্ষর ও উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
এ সময় নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশকে খুবই গুরুত্ব দেয়। উভয় দেশের মানুষ ও জীবনযাত্রার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, নেপাল তার পরই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং পর্যটক বিনিময়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা উভয় দেশ এ সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে চাই। নেপাল ভারতের সহযোগিতায় হাইড্রো পাওয়ার উৎপাদন করছে, যা বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করেছে, এজন্য নেপাল বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া, নেপাল (বিবিআইএন) প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট সব দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের বাণিজ্য বৃদ্ধির টেকনিকাল বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে নেপাল কাজ করছে। এফটিএ স্বাক্ষরিত হলে উভয় দেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা হবে। আসন্ন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সেদেশের পররাষ্ট্র সচিব সংকর দাস বৈরাগী, ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানশিধর মিশ্র, নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইয়াগা বাহাদুর হামাল। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান (সচিব) ফাতেমা ইয়াসমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।