মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর: সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম কমলেও আটা-ময়দার দাম কমছে না। বরং আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আটা-ময়দা। ফলে সাধারণ মানুষকে এখনও বেশি দামে আটা কিনতে হচ্ছে। একইভাবে ময়দার দাম বেড়ে যাওয়ায় বেকারি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি আটা-ময়দার দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন আটা-ময়দার এখন আর কমছে না, বরং দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা কমেছে। কিন্তু আটা-ময়দার দামে নড়চড় হয়নি। ফলে আগের মতো চড়া রয়েছে আটা-ময়দার বাজার। বর্তমানে বাজারে খোলা আটা প্রতি কেজি ২৯ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা চলতি মাসের শুরুতে ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। আর বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত আটা ছিল ২৮ থেকে ২৯ টাকা। তা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩১ থেকে ৩২ টাকায়। একইভাবে ৩২ থেকে ৩৪ টাকার খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। কোম্পানির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত ময়দা ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা আগে ছিল ৩৮ থেকে ৪০ টাকা। বাজারে চালের দাম কমায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও আটার ক্রেতারা অস্বস্তিতে আছেন। তাদের বাড়তি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে আটা।
এদিকে ময়দার দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বেকারি শিল্পে দামের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ময়দার দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত বেকারি পণ্যের দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। আবার অনেক বেকারি মালিক দর বৃদ্ধির ঝুঁকিতে না গিয়ে বেকারি পণ্যের সাইজ ও ওজন কমিয়ে দিয়ে উৎপাদন খরচ তুলে নিচ্ছেন। এতে ভোক্তাদের দামের আঁচ সইতে হচ্ছে।
গাউসিয়া কনফেকশনারির মালিক হাজি আওরঙ্গজেব বলেন, দিনের পর দিন বেকারির অন্যতম পণ্য ময়দার দাম হু হু করে বেড়েই চলেছে। দাম কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় তার মতো সব বেকারি মালিক চিন্তিত। এতে ক্রেতাদের সঙ্গে বেকারি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের।
দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে নীলফামারী জেলা ব্রেড বিস্কুট অ্যান্ড বেকারি মালিক সমিতির সভাপতি ও সৈয়দপুর ডায়মন্ড কনফেকশনারির মালিক আখতার সিদ্দিকী পাপ্পু জানান, বেকারি পণ্য উৎপাদনের জন্য উন্নতমানের ময়দার প্রয়োজন হয়। এসব ময়দার দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পণ্য উৎপাদন খরচও অনেক বেড়ে গেছে। তাই আগের দামে পণ্য বিক্রি করে পোষাচ্ছে না। উৎপাদন খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারপরও দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে আটা-ময়দার মিল মালিকদের সূত্রে জানা যায়, মোকামে আটা তৈরি গমের দাম মণপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একইভাবে ময়দা তৈরির গমের দাম প্রতি মণ বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। ফলে পাইকারি বাজারে আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সূত্র মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দর বৃদ্ধিতে আমদানিকারক ও পাইকারি গম ব্যবসায়ীরা দর বাড়িয়ে দিয়েছে। সূত্রের দাবি, চট্টগ্রাম মোকামে গমের বাজার অস্থির হয়ে উঠায় সহসা আটা-ময়দার দাম কমবে না। বরং দাম বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা বলে সূত্রটি।
Add Comment