নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী বছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক রেকর্ড ৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে, যা তার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বেশি। ২০২২ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ২ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। একই সময়ে সোনালী ব্যাংকের ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ১৬ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮০৯ কোটি টাকায়, যা তার আগের বছর শেষে ছিল ৮৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিদায়ী বছর ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে ৮ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। আমানত ও ঋণের অনুপাতের হার ৫৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে, অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।
গতকাল সোমবার সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফজাল করিম।
আফজাল করিম বলেন, সোনালী ব্যাংক নন-পারফর্মিং লোন কমিয়ে পারফর্মিং লোন বাড়িয়েছে। একটা ব্যাংকের যখন পারফর্মিং অ্যাসেট বৃদ্ধি পায়, তখন সেটা থেকে আয় বাড়ে। এছাড়া আমাদের কিছু দিন আগেও বিনিয়োগের বেশিরভাগ ছিল ট্রেজারি বিল-বন্ডে। সে ধারা থেকে সোনালী ব্যাংক বেরিয়ে এসে লোন বাড়িয়েছে। যার কারণে ঋণ-অগ্রিমের যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেখান থেকে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গত বছর রেকর্ড পরিচালন মুনাফা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সোনালী ব্যাংকের নিট ইন্টারেস্ট ইনকাম ২০২১ সাল পর্যন্ত নেগেটিভ ছিল। সুদ আয়ের চেয়ে সবসময় ব্যয় বেশি ছিল। তবে ২০২২ সালে নিট ইন্টারেস্ট ইনকাম পজিটিভ করেছি। আর গত বছর নিট ইন্টারেস্ট ইনকাম ৮২৭ কোটি টাকা পজিটিভ হয়েছে।
আফজাল করিম জানান, ২০০৭ সালে আমাদের ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এখন তা কমতে কমতে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় নেমেছে। ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে। তিনি জানান, অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যত ঋণ বিতরণ হয় তার ১৫ শতাংশই সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আফজাল করিম বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের কাছে জনগণের প্রত্যাশা থাকে বেশি। সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য ব্যাংকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেষ্টা করেছে। সোনালী ব্যাংক নামে শুধু রাষ্ট্রীয় ব্যাংক হবে না কি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের ব্যাংক হবে তার লক্ষ্যে বছরের শুরু থেকে কাজ শুরু করেছি। গ্রাহকের সেবাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত ব্যাংকিং সেবা আরও আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও গ্রাহকবান্ধব করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছি। চলতি বছরের শুরু থেকে ক্রমান্বয়ে সোনালী ই-সেবা মোবাইল অ্যাপের আইওএস ভার্সনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে হিসাব খোলা, ই-ওয়ালেট মোবাইল অ্যাপের আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে লেনদেন এবং কিউআর কোডের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন, ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার (নম্বর ১৬৬৩৯) সেবা চালু করা হয়েছে। এর সুফল হিসেবে নানা সূচকে সোনালী ব্যাংক এগিয়ে রয়েছে।’