নিয়োগদাতার মনোযোগ কাড়তে প্রয়োজন রিজিউমি। বেশিরভাগ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা এর মানোন্নয়নের পেছনে ব্যয় করে। নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে উৎকৃষ্ট রিজিউমি বানাতে চায় সবাই। শেষ আঁচড় দেওয়ার পরে অনেকে তা লিঙ্কডইন প্রোফাইলে অ্যাড করে।
ধরে নেওয়া যায়, এ কৌশলটি কাজে দেয়। এভাবে লিঙ্কডইনে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরা যায়। তবে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিকে রিজিউমির আদলে গড়ে তোলা কখনও ঠিক নয়।
সত্যি বলতে, রিজিউমি ও লিঙ্কডইনের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। দুয়ের উদ্দেশ্যও এক নয়। তাই এদের ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা উচিত। এই দুই পদ্ধতি থেকে সর্বোচ্চ আদায় করে নিতে চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়ায় এদের ভূমিকা ও সুবিধা বুঝে নিতে হবে।
বৃহৎ অর্থে, লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিত্ব তুলে ধরে। অনেকটা কথা বলার শুরুর মতো। আর রিজিউমি বলে দেয়, চাকরি খোঁজার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এটি। লিঙ্কডইন এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর পেশা সম্পর্কে ধারণা দেয়। নিয়োগদাতাদের সঠিক প্রার্থী খুঁজে পেতে টুল হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটি।
হেডলাইন
নির্দিষ্ট চাকরির জন্য নির্দিষ্ট করে হেডলাইন তৈরি করার সুযোগ রয়েছে রিজিউমিতে। কাক্সিক্ষত চাকরির চাহিদানুযায়ী কাস্টোমাইজ করে নিতে পারেন। মানানসই করার জন্য কিছু শব্দ বা প্যারা যোগ করতে পারেন, চাইলে বাদও দিতে পারেন।
লিঙ্কডইনে কেবল একটি প্রোফাইল খুলতে পারবেন। নিজের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য অনেক বিষয় অ্যাড করতে পারবেন। এখানে একটি হেডলাইনের পরিবর্তে অনেক কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। যে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে আছেন, তার জন্য বিশেষ শব্দ বাছাই করতে পারবেন।
স্বর
অনেক রিজিউমি প্রতিষ্ঠানের চাহিদামতো তৈরি করতে হয়। সেক্ষেত্রে ‘আই’, ‘মাই’ প্রভৃতি শব্দ পরিহার করতে হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও সংক্ষিপ্ত ও সুস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করতে হয়।
লিঙ্কডইনে এমন ধরাবাঁধা কিছু নেই। এখানে বন্ধুভাবাপন্ন শব্দ যত খুশি তত ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। উপরন্তু কর্তৃবাচ্য ব্যবহারই উত্তম। এমনভাবে প্রোফাইলটি তৈরি করুন যেন সেখানে পেশাদারিত্বের ছাপ থাকে, স্বরটি ক্যাজুয়াল হলেও সমস্যা নেই।
সারাংশ
রিজিউমির সারাংশ সংক্ষিপ্ত ও মধুর হতে হবে। এটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন শিগগিরই মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে।
অন্যদিকে লিঙ্কডইনের সংক্ষিপ্ত সার বিস্তৃত হওয়া বাঞ্ছনীয়। যত বড় করা হবে, তত বেশি মানুষ আপনাকে খুঁজে পাবে। ২০০০ ক্যারেক্টার যোগ করতে পারেন।
অন্য ব্যবহারকারী সঙ্গে যোগাযোগের চমৎকার ক্ষেত্র এটি। এখানে আপনার ক্যারিয়ারের ‘গল্প’ তুলে ধরুন। আপনার সেরা অর্জন উল্লেখ করুন। কাজের ভিডিও, পিডিএফ ফাইল, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রভৃতি উল্লেখ করতে পারেন। মাথায় রাখতে হবে, কর্ম ও কর্মক্ষেত্রের সব বিষয় এখানে রাখতে হবে। সহজে যেন পড়া যায়, বোধগম্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
লিঙ্কডইন প্রোফাইলকে কখনও অনলাইন রিজিউমি মনে করা যাবে না। এটা রিজিউমির চেয়ে অনেক বড় ক্ষেত্র।
রতন কুমার দাস