সৌদি আরবের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলার পার করেছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের অর্থনীতি প্রথমবারের মতো ট্রিলিয়ন ডলারের হয়েছে। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে এমন অর্জন দেখল দেশটি। কিংডমের ৯৩তম জাতীয় দিবসে এই তথ্য জানিয়েছে ফেডারেশন অব সৌদি চেম্বারস। খবর: গালফ নিউজ।

সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজে বলা হয়েছে, দেশটির অর্থনীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, যা জি২০ দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এক পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, ২০২৩ সালে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ১ শতাংশ বাড়তে পারে।

সেই পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে গেছে সৌদি আরব। উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণেই এমন প্রবৃদ্ধি দেখেছে দেশটি, যা মোট প্রবৃদ্ধির ৮১ দশমিক ২ শতাংশ। বাকি ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে বিনিয়োগ খাতের কারণে। তাছাড়া স্থানীয় মুদ্রার ডিপোজিটও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

জিডিপিতে বেসরকারি খাত ১ দশমিক ৬৩৪ ট্রিলিয়ন সৌদি রিয়াল যোগ করেছে, যা জিডিপির ৪১ শতাংশ। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

দেশটিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি খাতে কর্মীর সংখ্যাও বেড়েছে। ২০২১ সালে যেখানে কর্মী ছিল আট মিলিয়নের সামান্য বেশি, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৯ মিলিয়নে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

মূলত অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যে নজর দেয়ার কারণে এমন সফলতার পথে সৌদি আরব রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশটির পণ্য ও সেবা খাতের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। তাছাড়া রপ্তানি সক্ষমতা ২০২১ সালের ৩৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৩৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

সাম্প্রতিকালে সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে সৌদি আরব। অর্থনীতি বহুমুখী করার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, বিনোদন ও পর্যটনকে বেছে নিয়েছে দেশটি। এজন্য ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

গত বছরে দেশটির অর্থমন্ত্রী যৌথ শুল্ক অঞ্চল নির্মাণ করা, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বাইরে সাধারণ শুল্কের হার প্রয়োগের আহ্বান করেন। তিনি উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য একটি বিশেষ বাণিজ্য অঞ্চল গঠন করার ঘোষণা দেন, যাতে ২০২৫ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক ঐক্য অর্জন হয়। এর আগে ২০২৪ সালের মধ্যে স্বতন্ত্র শুল্কমুক্ত অঞ্চল গঠন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেন। তারা এ লক্ষ্যে কাস্টমস ইউনিয়ন অথরিটি ও গালফ কম মার্কেট কমিটি গড়ার প্রস্তাব দেন।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে সবার অংশগ্রহণে একটি বাজার, কাস্টমস ইউনিয়ন, একই মুদ্রা-কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠনের অনুমোদন দিয়েছে জিসিসি। তবে আজও এসব সিদ্ধান্তের বেশিরভাগ আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের অবাধ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। যদিও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নানা ধরনের বিধি-নিষেধ এখনও রয়েছে। বৈচিত্র্য আনার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেয়া হলেও জিসিসির অর্থনীতি এখনও তেল রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ আয় আসে তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে। বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহের এক-পঞ্চমাংশ আসে এই ছয় সদস্য রাষ্ট্র থেকে। আর জিসিসির মোট অর্থনীতির ৭৫ শতাংশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের।

এদিকে অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার জনবহুল এই দেশটি। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল ডি পাত্রা বলেন, ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে ভারত। এসময় অর্থনীতির আকার দাঁড়াবে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব কম্বোডিয়া আয়োজিত ১৬তম এসইএসিএন-বিএইএস উচ্চস্তরের সেমিনারে পাত্রা বলেন, আগামী দুই দশকে বৈশ্বিক অর্থনীতির কেন্দ্র যাবে পূর্ব এশিয়ার দিকে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০