Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:00 am

সৌদি আরবের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলের জন্য সৌদি আরব তেলের দাম বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আরও কমে যাওয়ায় তেলের দাম বেড়েছে। খবর: রয়টার্স।

বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্য। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েল-হামাস সংকট ছড়িয়ে পড়তে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও হামাসের লড়াইয়ের পাশাপাশি নানা ধরনের সংকট চলছে।

গতকাল সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২৮ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৮৩ ডলার ২৪ সেন্ট হয়েছে। এছাড়া ইউএস টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ২৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৭৮ ডলার ৪০ সেন্টে উঠেছে।

আগামী মাসে এশিয়া, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের দেশগুলোয় যে তেল বিক্রি করবে সৌদি আরব, তার দাম বাড়ানো হয়েছে। এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, চলতি গ্রীষ্মকালে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে।

তবে বিশ্বের বৃহত্তম জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করবে, এমন পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বাজারসংশ্লিষ্টদের সে আশা পূরণ হচ্ছে না। দেশটি জানিয়েছে, তেল উত্তোলন বাড়ানোর সেই পরিকল্পনা তারা বাদ দিয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী রাখতে গত বছর থেকে আগ্রাসীভাবে তেলের উৎপাদন কমিয়েছে সৌদি আরব ও ওপেকের সদস্য বিভিন্ন দেশ।

সৌদি আরব গত বছর দৈনিক গড়ে ৯০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করেছে। বিশ্বের মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ এটা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব। তবে তাদের উৎপাদন সক্ষমতা এক কোটি ২০ লাখ ব্যারেল। এর আগে দেশটির সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দাবি করেছিলেন, সৌদি আরব দিনে দুই কোটি ব্যারেল তেল উৎপাদন করতে পারে।

গত সপ্তাহে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায় জ্বালানি তেলের দাম ৭ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছিল। সোমবার সপ্তাহের শুরুতে সেই ধারা ভেঙে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বাড়ল। বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএনজির পণ্য গবেষণা বিভাগের প্রধান ওয়ারেন প্যাটারসন এ তথ্য দিয়েছেন।

গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই উভয় ধরনের অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম কমেছে সাত শতাংশের বেশি আর ডব্লিউটিআই ক্রুডের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু কারণে দাম কমে।

গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছিলেন, এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের গতি কিছুটা কমবে এবং পরিণামে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেড নীতি সুদহার কমানোর দিনক্ষণ ঘোষণা করবে, কিন্তু বাস্তবে উল্টোটি হয়েছে। ফেডারেল রিজার্ভ জানিয়েছে, আপাতত নীতি সুদহার কমানো হচ্ছে না।

এদিকে গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ফিকে হয়ে এসেছে। হামাস দাবি করেছিল, বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হোক। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী একটি অভিযানের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের রাফাহ সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করেনি যে এটি একটি স্থল হামলার প্রস্তুতির অংশ ছিল।

অন্যদিকে টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় তেল ও গ্যাসের খনির সংখ্যা কমেছে, বিশেষ করে তেলের খনির সংখ্যা কমেছে বেশি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সাতটি কমে গিয়ে সক্রিয় খনির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯৯টিতে। ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর আর কখনও এক সপ্তাহের ব্যবধানে এতগুলো খনি উৎপাদনের বাইরে চলে যায়নি।