Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:11 am

সৌদি আরবের রোশন গ্রুপের ২.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবের শীর্ষ রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার রোশন গ্রুপ গত রোববার চারটি বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৯ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল (২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ২৪০ কোটি ডলার)। দেশটির নির্মাণ এবং অবকাঠামা খাতে এ চুক্তি ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। খবর: আরব নিউজ।

সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) তথ্য অনুযায়ী, পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ডের অধীনে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য সৌদি ভিশন ২০৩০ অর্জন করা।

এসপিএ-এর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠানটি চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে ৭ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর আওতায় রিয়াদের সেদরা ও ওয়ারফার বাসিন্দাদের জন্য ৬ হাজার ৭০০ আবাসিক ইউনিট নির্মাণ করবে।

এ চুক্তিতে আরও দেখা গেছে, রোশন এবং চীনা কোম্পানি যৌথভাবে বাসিন্দাদের জন্য মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার, খুচরা দোকান এবং সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে।

রোশনের আরেকটি চুক্তি হয়েছে বিসি মেরিন সার্ভিসেসের সঙ্গে। এর আওতায় তারা খাল খনন করবে এবং সেতু নির্মাণ করবে। সম্প্রতি জেদ্দার মারাফি প্রকল্পের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে এসব কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের বসবাসের স্থান বরাদ্দ করা হবে। এর মধ্যে ১০০ মিটার প্রশস্তের খালও রয়েছে। মানুষের তৈরি এই খালটির লম্বায় ১১ কিলোমিটার। এটি ওভুর ক্রিকের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে।

মারাফি প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য কৃত্রিম খালটিকে শিকাগো, স্টকহোম, হামবুর্গ কিংবা সেন্ট্রাল লন্ডনের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে জেদ্দার সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে।

রোশনের আরেকটি অংশীদারিত্ব চুক্তি হয়েছে সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের সঙ্গে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে রোশন কমিউনিটিতে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এর আর্থিক মূল্য ১২ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।

সৌদি আবিয়াতের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করেছে রোশন। এর আওতায় ১২ হাজার রান্নাঘরের নকশা এবং সরবরাহ করা হবে। রোশনের ভবিষ্যৎ গ্রাহকদের জন্য এমন নকশা করা হচ্ছে।

রোশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেভিড গ্রোভার বলেন, আমদের রোশন গ্রুপ সৌদি আরবের বিশেষজ্ঞ এবং বৈশ্বিক উৎকর্ষতার সমন্বয়ে বৈচিত্র্যময় অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করি, যাতে স্থানীয় অধিবাসী এবং বাসিন্দারা উপকৃত হন।

তিনি আরও বলেন, এই চুক্তিগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের কৌশল এবং সরবরাহ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করি। কেননা এসব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাস্তবসম্মতভাবে ভিশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

চলতি মাসে নির্মাণবিষয়ক সাময়িকী ‘মিডল ইস্ট’-এর শীর্ষ ৫০ গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) অঞ্চলের সেরা আবাসন প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পায় রোশন। কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটির এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সম্পন্ন করা প্রকল্পগুলো, নির্মিতব্য প্রকল্পগুলো, হস্তান্তর করা হয়েছে এমন প্রকল্পগুলো এবং করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গীকার। টেকসই আবাসন নির্মাণও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রসঙ্গত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মস্তিষ্কপ্রসূত বিশাল পরিকল্পনা ভিশন ২০৩০। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাকেঞ্জির সহায়তায় ৩৭ বছর বয়স্ক যুবরাজ এ মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেন। এর অনেক অংশ রয়েছে, যার কিছু কিছু ‘গিগাপ্রজেক্ট’, অর্থাৎ বিশাল কর্মযজ্ঞের। এর মাধ্যমে এই দশকের শেষ নাগাদ সৌদি আরব তিনটি লক্ষ্য অর্জন করতে চায়। এক. এমন একটি অর্থনীতি তৈরি করা, যা আর তেলের ওপর নির্ভরশীল নয়। দুই. প্রায় চার কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। তিন. বিশ্ব মঞ্চে দেশটির অবস্থান অক্ষুণœ রাখা।