সৌদি আরামকো বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছর প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চে সৌদির তেল কোম্পানি আরামকোর মুনাফা হয়েছে ৮২ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বে সবচেয়ে দামি কোম্পানি এখন সৌদি আরামকো। খবর: বিবিসি।

আরামকোর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযানের পর জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা ও তেলের দাম বাড়ায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানিটি। সম্পদের দিক দিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বে সবার ওপরে উঠে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। গায়ে লেগেছে সবচেয়ে দামি কোম্পানির তকমা।

প্রথম প্রান্তিকে আরামকোর নেট আয় দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৯৫০ কোটি ডলারে, যা গত বছরের একই সময়ের ২১ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, প্রাথমিকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম ও বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং নি¤œমুখী মার্জিনগুলোর উন্নতির কারণে এই লাভ হয়েছে।

আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন নাসের বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, তেল ও গ্যাসের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াচ্ছি।

তেল উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পর রয়েছে রাশিয়া। অর্থাৎ রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। তবে ইউক্রেনে হামলার কারণে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার আগে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রপ্তানির প্রায় অর্ধেক ইউরোপে যেত। ২০২০ সালে নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি দৈনিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার তেল আমদানি করেছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, সেøাভাকিয়া গত বছর তাদের মোট তেল আমদানির ৯৬ শতাংশ করেছে রাশিয়া থেকে। হাঙ্গেরির ক্ষেত্রে এ হার ৫৮ শতাংশ। তেলের বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজে পেতে এ দেশ দুটিকে অতিরিক্ত এক বছর সময় দেয়া হয়েছে। গত বছর যুক্তরাজ্যের মোট তেল আমদানির আট শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ হার ছিল তিন শতাংশ। তাই যুক্তরাষ্ট্র চায়, সৌদি আরব তার তেল উৎপাদন বাড়াক। এ ছাড়া ভেনেজুয়েলার তেলসম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে লাভবান হচ্ছে সৌদি আরামকো।

অন্য জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন শেল, বিপি ও টোটালএনার্জিসের আশাতীত মুনাফা হয়েছে। তবে তারাও রাশিয়ায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত অর্থ গুনছে। আরামকোর প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের চাহিদা মেটাতে আমরা কাজ করছি। নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী মূল্যের ও ক্রমবর্ধমান টেকসই জ্বালানি সরবরাহ করছি আমরা। সৌদি আরব তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জোট ওপেকের বৃহত্তম সদস্য। সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমাতে সাহায্য করার ক্ষমতা রয়েছে দেশটির। এ কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে সৌদি আরবের সদিচ্ছা প্রয়োজন। তাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত মার্চে দেশটিতে সফর করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে।

গত মার্চে তেল ও গ্যাস উৎপাদকরা এ খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন এবং আগামী পাঁচ থেকে আট বছর একই ধারা ধরে রাখতে চান তারা। তবে সৌদির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশ ইয়েমেনে সামরিক অভিযান নিয়ে দেশটির ওপর ক্ষুব্ধ অনেক পশ্চিমা দেশ। আরামকোও ইয়েমেনের সঙ্গে দ্ব›েদ্বর কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশটির হুতি বিদ্রোহীরা প্রতিষ্ঠানটির কিছু সাইট লক্ষ করে প্রায়ই হামলা চালায়। এতে অনেক সময় অপরিশোধিত তেল উৎপাদন ব্যাহত হয় আরামকোর। তবু বিশ্বে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আরামকো শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দুই হাজার কোটি ডলার বোনাস দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০