নিজস্ব প্রতিবেদক: সৌদি আরব সরকারের ‘নেশন উইদাউট ভায়োলেশন’ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে চলমান ধরপাকড়ের মুখে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে ফিরেছেন দেড় হাজারের বেশি কর্মী। এর মধ্যে গত বুধবার রাতে দেশে ফিরেছেন ২১৫ জন।
বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যানুযায়ী, চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে এক হাজার ৫৬১ কর্মী দেশে ফিরেছেন। আর চলতি বছরে সৌদি আরব থেকে মোট ২১ হাজার বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে গত বুধবার রাতে ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে ৬৮ জন ও রাত ১টা ১৫ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০২ ফ্লাইটে ১২৯ জন বাংলাদেশি ফেরত আসেন। ফেরত আসা কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার, পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
ফিরে আসা কর্মীদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের সোহরাব গণমাধ্যমকে জানান, ‘মাথায় জড়ানো মাফলার ছাড়া আর কিছুই আনতে পারিনি। দুই বছর আগে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধরপাকড়ে সব স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। রুম থেকে ধরে নিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ বছএদিকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব গিয়েছিলেন গাজীপুরের হারুন। তিনি একটি নির্মাণাধীন কোম্পানিতে কাজ করতেন। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে ধরপাকড়ের শিকার হয়ে তাকে দেশে ফিরতে হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলার শাহবুল ইসলাম বিদেশ যাওয়ার আগে দেশে গাড়ি চালাতেন। দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সির প্রলোভনে পড়ে চার মাস আগে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু চার মাসে কোনো বেতন পাননি। উল্টো ধরপাকড়ের শিকার হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো। তাদের মতো সিলেটের কামাল আহমেদ, টাঙ্গাইলের মো. জাহেদ আলী, গাজীপুরের ইমরান, কুমিল্লার ইব্রাহিম, নরসিংদীর বাবুলসহ আরও অনেকেই তাদের সৌদি আরব যাতায়াতের জন্য খরচের টাকাটাও তুলতে পারেননি।