শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরবে দুর্নীতির অভিযোগে গত নভেম্বরে গ্রেফতার হওয়া দুই শতাধিক প্রিন্স, মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীর ‘কয়েদখানা’ হিসেবে ব্যবহার করা পাঁচতারকা
রিটজ-কার্লটন হোটেল সম্প্রতি খুলে দেওয়া হয়েছে। দেশটির রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত পাঁচতারা হোটেলটির কর্মীরা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি।
কর্মীরা জানিয়েছেন, তাদের হোটেলটি অতিথিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত জানুয়ারি পর্যন্ত হোটেলটিতে কোনো অতিথি রাখা হয়নি।
সৌদি আরবের প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, রিটজ-কার্লটন হোটেলে এখনও ৫৬ জন বন্দি রয়েছেন। যদিও দেশটির কোনো কোনো পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিটজ-কার্লটন হোটেলের বাকি বন্দিদের কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানুয়ারির শেষদিকে প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রিন্সসহ প্রভাবশালী গ্রেফতার ব্যক্তিদের সঙ্গে অর্থনৈতিক দণ্ডের রফা করেছে সরকার। এ প্রক্রিয়ায় সরকার ইতোমধ্যেই দশ হাজার কোটি ডলার বা ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ উদ্ধার করেছে। যদিও সরকারের হিসাবে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের গোপন বা অফশোর হিসাবের অর্থের পরিমাণ আনুমানিক প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার।
গত নভেম্বরে দেশটিতে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালু হওয়ার পর থেকে গ্রেফতার প্রভাবশালী বন্দিদের রাখার জন্য রিটজ-কার্লটনসহ বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল হোটেল ব্যবহার করা হয়।
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান দেশটির দুর্নীতি দমন কমিটির প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ওই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এরপর একে একে রাজপরিবারের সদস্য, মন্ত্রী ও শীর্ষ ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হন। তাদের বিলাসবহুল হোটেলে আটকে রাখা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনার পাশাপাশি, তাদের ব্যক্তিগত বিমানগুলো আটকে রাখা হয় এবং তাদের সম্পত্তি জব্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল ও সৌদি মিডিয়া মোগল ওয়ালিদ আল-ইব্রাহিম উল্লেখযোগ্য।
কেউ কেউ বলেন, দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি যুবরাজের এ উদ্যোগের সঙ্গে ক্ষমতার যোগসূত্র আছে। ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান বা এমবিএস নামেও যিনি পরিচিত, এরই মধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোয় তিনি ক্ষমতা করায়ত্ত করেছেন। তিনি এখন বিশ্বের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরক্ষামন্ত্রী। দুর্নীতি দমন অভিযানের মাধ্যমে তিনি কার্যত নিজের ক্ষমতার জানান দিয়েছেন।