শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফরাসি সম্রাট চতুর্দশ লুইয়ের ঐতিহাসিক প্রাসাদ ‘শ্যাঁতো’ কিনে নিলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ প্রাসাদটি বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান একটি সম্পদ হিসেবে বিবেচিত; যেখানে সিস্টিন চ্যাপেল শৈলীর কারুকাজমণ্ডিত ছাদ, আস্তাবল, অ্যাকুরিয়াম, ভূগর্ভস্থ নাইট ক্লাব রয়েছে। ২০১৫ সালে এ প্রাসাদটি বিক্রি হয়েছিল ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যে। কিন্তু সে সময় ক্রেতার পরিচয় পাওয়া যায়নি। গত শনিবার নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে ক্রেতার নাম প্রকাশ করে। তিনি আর কেউ নন; সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুই বছর আগে বিক্রির সময় ফরচুন মাগাজিন এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রাসাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, ডেইলি মেইল।
পুরোনো এ প্রাসাদটিতে সব ধরনের ঐতিহ্য ও নির্মাণশৈলী অক্ষুণœ রেখে আধুনিক ধাঁচের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। ২০১১ সালে ৫৭ একর জমিতে প্রাসাদটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও এটিতে রয়েছে ১৭ শতাব্দীর ঐতিহাসিক ফরাসি সংস্কৃতির ধারক ও বাহকে পানশালা, ঘরোয়া থিয়েটার হল, ভূগর্ভস্থ অ্যাকুরিয়াম, বিশাল বাগান, ভাস্কর্য, স্কোয়াশ কোর্টসহ নানা ধরনের অত্যাধুনিক উপকরণ সন্নিবেশের ফলে এটি বিশ্বে নজরকাড়া প্রাসাদে পরিণত হয়েছে।
সম্রাট চতুর্দশ লুই ১৬৪৩ থেকে ১৭১৫ পর্যন্ত টানা ৭২ বছর ফ্রান্স শাসন করেন এবং তারই দিকনির্দেশনায় প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের এ প্রাসাদ ক্রয়ের বিষয়টি ফ্রান্স ও লুক্সেমবার্গের একাধিক বাড়ি ক্রয়-বিক্রয় প্রতিষ্ঠান গোপন রাখলেও নিউইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধানে তা প্রকাশ হয়ে যায়।
সৌদি রাজকীয় পরিবারের উপদেষ্টারা স্বীকার করেছেন বাড়িটির মালিক যুবরাজ। যিনি তার দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ পরিচালনা করছেন এবং শতাধিক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, সাবেক মন্ত্রী ও আমলা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিকে আটক করে ১০০ বিলিয়ন ডলার জরিমানা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন।
দিন কয়েক আগে দ্য ভিঞ্চির একটি বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘যিশুখ্রিস্টের’ ছবি সাড়ে ৪৫০ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেন ক্রাউন প্রিন্স, যা আবুধাবির নতুন ল্যুভর মিউজিয়ামে স্থাপন করা হয়। তারও আগে রুশ ভদকা প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছ থেকে একটি প্রমোদতরী ‘প্যাগাসাস-৮’ কিনে নেন সাড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলারে।
ইতোমধ্যে ক্রাউন প্রিন্স ভিশন ২০৩০-এ অংশ হিসেবে তার দেশকে তেলের নির্ভরতা থেকে দূরে সরিয়ে নিতে আর্থিক সংস্কার শুরু করেছেন। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে আটক সৌদি রাজপরিবারের অনেকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিয়ে ছাড় পেয়েছেন।