গতকালের পর
শিশুদের বোঝাতে হবে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে বন্ধুকে জড়িয়ে ধরা যাবে না, করমর্দন বা হ্যান্ডশেক করা যাবে না, হাতাহাতি তো নয়ই। একটু দূরে বসেই গল্প করতে হবে। খেলার সময়ও তা-ই। নিজেদের ভালোর জন্যই এসব করতে হচ্ছে।
সঙ্গে যা রাখা ভালো: স্কুলব্যাগে টিস্যু পেপার বা পরিষ্কার রুমাল এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ছোট বোতল তো দেবেনই। টিফিন বক্স বা পানির বোতল যে অন্যের সঙ্গে এখন ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না, তাও বলুন; এমনকি কলম, পেনসিল ও রং পেনসিলও নয়। শিশুর ব্যাগে পলিথিন প্যাকেটে অতিরিক্ত মাস্ক দিতে হবে। কেননা তারা খাওয়ার সময় মাস্ক খুলতে গিয়ে ময়লা করতে পারে, কখনও মাস্ক নিচে পড়ে যেতে পারে। একবার ব্যবহার করা ময়লা মাস্ক আবার পরা যাবে না, তা বুঝিয়ে বলুন।
আরও যা যা মানতে হবে: স্কুল থেকে ফেরার পর স্কুলের জামাকাপড়, ব্যাগ, টিফিন বক্স, বোতলÑসবই ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। শিশুকে ভালো করে গোসল করিয়ে নিতে হবে। স্কুলে পরে যাওয়া জুতা ঘরে ঢোকানো যাবে না।
শিশু অসুস্থ হলে কিছুতেই স্কুলে নিয়ে যাবেন না। অভিভাবকেরা অনেক সময় উপস্থিতি কাটা যাওয়া বা পরীক্ষা দিতে না পারার ভয়ে অসুস্থ শিশুকেও স্কুলে যেতে বাধ্য করেন। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সাহায্য করবে, যেমন অসুস্থ শিশুটিকে পরীক্ষা না দিয়েও কীভাবে নম্বর দেয়া যায় বা তার পরীক্ষা বিশেষভাবে পরে বা অনলাইনে নেয়া যায়, সেই বিকল্প বের করবেন। কোনো শিশু স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত আইসোলেশনে নিতে হবে। প্রতিটি স্কুলে সিক রুম বা আলাদা আইসোলেশন রুম থাকা বাঞ্ছনীয়।
স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে অতি উৎসাহে শিশুর ওপর পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ দেবেন না। দীর্ঘদিনের অনভ্যস্ততা কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে সময় দিন। করোনাকালে পড়াশোনার ঘাটতি পূরণ করার চেয়ে এই মুহূর্তে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুকে আবার স্কুলের পরিবেশে ফিরিয়ে আনা এবং এই পরিস্থিতিতে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর স্কুল-কলেজ খোলার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে কিছু বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। সেগুলো হলো এক. তাপমাত্রা পরীক্ষা করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রবেশের ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা; দুই. ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসহ প্রত্যেকের মাস্ক ব্যবহার করা; তিন. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। [শেষ]
অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা
বিভাগীয় প্রধান, শিশু বিভাগ
বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা