নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলেও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এসব খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
মহামারিতে দেড় বছর পর স্কুল-কলেজ খোলার দুই সপ্তাহ পর গতকাল শনিবার ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি দেখছি, প্রায়ই আমাকে লিখে পাঠাচ্ছে যে, এই স্কুলে এতজন শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত, ওই স্কুলে এতজন আক্রান্ত। আমরা প্রতিটি জায়গায় সঙ্গে সঙ্গেই অনুসন্ধান করছি। তবে আশার বিষয় হচ্ছে যে, শিক্ষার্থীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখছে এখানে আক্রান্ত, ওখানে আক্রান্ত, আমরা এখন পর্যন্ত কোথাও সত্যতা কিন্তু পাইনি।’
গত বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) করোনাভাইরাসে উপসর্গ নিয়ে মানিকগঞ্জের এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর আসে গণমাধ্যমে। ওই শিক্ষার্থী ১৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ স্কুলে এসেছিল। তখন তার শরীরে কোনো সমস্যা ছিল না।
এর বাইরে বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেখানে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের কথা শোনা যাচ্ছে। সেগুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের, তারা সেগুলোর ব্যাপারে দেখছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’
মানিকগঞ্জে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী শুধু ১৫ সেপ্টেম্বর একবার স্কুলে এসেছিল, এর প্রায় ৭ দিন পর তার করোনা শনাক্তের খবর পাওয়া যায় এবং সে মৃত্যুবরণ করে। আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি বলেছেন, ও একদিনই স্কুলে এসেছিল। তখন তার কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না। যে কারণে সেখানে সবার আর পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগ আসা মাত্রই বা কোনো তথ্য পাওয়া মাত্র আমরা স্থানীয় প্রশাসন, সিভিল সার্জনের অফিস, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় আমরা সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’
পরিস্থিতি ফের নাজুক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেবেন না বলে দীপু মনি জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আগেই বলেছি, কোথাও যদি মনে করি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি প্রয়োজন হয় বন্ধ করে দেব। কোনো দ্বিধা করব না। এখন পর্যন্ত কোথাও সে রকম পরিস্থিতি তেমনভাবে হয়নি। তবে যদি কোথাও হয়, নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা নেব।’
সংক্রমণ এড়াতে সবার সচেতন থাকার ওপর জোর দেন শিক্ষামন্ত্রী, যিনি নিজে একজন চিকিৎসকও। তিনি বলেন, ‘যদিও (সংক্রমণ হার) শতকরা ৫-এর নিচে নেমে এসেছে, তারপরও কিন্তু অতিমারি চলমান সারাবিশ্বেই। কাজেই আমাদের তীক্ষè নজর রাখতে হবে। কেউ না কেউ অসুস্থ হতেই পারে, বাড়িতেও অসুস্থ হতে পারে, যাতায়াতের পথে অসুস্থ হতে পারে। এমনকি তাদের দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সংক্রমণ ঘটতে পারে, সেটি যেন না ঘটে।’
শিক্ষামন্ত্রী জানান, মধ্য নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা ও ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। প্রাক-প্রাথমিকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রাক প্রাথমিকের বাচ্চাদের এই মুহূর্তে আনতে চাচ্ছি না।’
তাদের সপ্তাহে এক দিন আনা হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না, একদমই না। এই মুহূর্তে না। তারা এখন বাড়িতে থাকুক। আমরা আবার সিদ্ধান্ত নেব। তিন সপ্তাহ পার হোক তারপর আবার সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।’