কোন দেশের স্ট্রিট ফুড বা রাস্তার খাবার সেরা? উঁহুঁ, সে বিতর্কে না গিয়ে আসুন জেনে নিই কোন দেশে বেড়াতে গিয়ে সেখানকার জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড না খেয়ে ফিরে আসার মানে জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা মিস করা! আজ বাটাগরের কথা জানাচ্ছেন হাসানুজ্জামান পিয়াস
ভাজা মাছের পুডিংবিশেষ সুন্দানিজ-ইন্দোনেশিয়ান এক ধরনের সুস্বাদু খাবার বাটাগর, যা চীনাবাদাম সস সহযোগে পরিবেশন করা হয়। এটি ঐতিহ্যগতভাবে টেঙ্গিরি (ওয়াহু) মাছ থেকে তৈরি। মাঝেমধ্যে অন্য সামুদ্রিক মাছ যেমন টুনা, ম্যাকরল, চিংড়ি ব্যবহৃত হয় বাটাগর তৈরিতে। কিমা করা মাছের পেস্ট পরে বাটাগর পুডিং হিসেবে ওনটোন (এক ধরনের চীনা পুডিংবিশেষ) স্কিন কিংবা টফু ভরাট করা হয়। এরপর পামওয়েলে ভাজা হয়।
রাস্তার পাশে যেসব বাটাগর তৈরি হয়, তা সাধারণত ভাজা টফু ও আঙুল আকারের ভাজা ওটাক ওটাক ফিম কেক সস সহযোগে পরিবেশন করা হয়। এই বাটাগর কামড়ের সাইজে কাটা হয়। উপরিভাগে চীনাবাদাম, সস, মিষ্টি সয়াসস, চিলি সসের সঙ্গে দেওয়া হয় লেবুর জুস। কারণ ভাজার কারণে বাটাগর শুকনো ও কুড়মুড়ে হয়ে যায়। পরিবেশন পদ্ধতি অভিন্ন হওয়ায় এখন বাটাগর ও সিয়োময় (সিয়োময় এক ধরনের ইন্দোনেশিয়ান খাবার ভাপ দিয়ে সেদ্ধ করা মাছের পুডিংয়ের সঙ্গে সবজি, চীনাবাদাম সস সহযোগে পরিবেশন করা হয়) একই ভেণ্ডরে বিক্রি হয়।
ইন্দোনেশিয়ান শহরগুলোর রাস্তার পাশের ফুড কোর্ট, ট্রাভেলিং কার্টস, বাইসাইকেল ভেণ্ডর কিংবা রেস্টুরেন্টগুলোয় বাটাগরের দেখা মেলে। ব্যানডুং শহরের সঙ্গে খাবারটির দৃঢ় সম্পর্ক থাকলেও এটি মূলত চায়নিজ ইন্দোনেশিয়ান খাবার। সম্ভবত এটি সিয়োময় থেকে উদ্ভূত। সিয়োময়ের সঙ্গে বাটাগরের পার্থক্য হলো সেদ্ধ করার পরিবর্তে সিয়োময় ভাজা হয়। এটি স্থানীয় সুন্দানিজ খাবারের মধ্যে অভিযোজিত হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ বাটাগর বিক্রেতা হলেন সুদানিজ।
বাটাগর ১৯৮০ সালের দিকে প্রথম ইন্দোনেশিয়ার শহরগুলোয় আসে। যদিও বিশ্বাস করা হয়, ১৯৬৮ সালে ব্যানডুং শহরে এর উৎপত্তি। বাটাগর উৎপত্তির প্রচলিত এক গল্প আছে। তা হলো, বিক্রি না হওয়া ‘বাকসো মিটবল’ থেকে বাটাগরের উদ্ভব। বলা হয়, একদিন এক ‘বাকসো মিটবল’ বিক্রেতার কোনো খাবার বিক্রি হয়নি। বিক্রেতা অনেক ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য বুদ্ধি করে টফুর সঙ্গে সেগুলো গভীরভাবে ভেজে চীনাবাদাম সস সহযোগে ক্রেতাদের কাছে ভিন্নরকম সিয়োময় হিসেবে পরিবেশন করেন। এরপর তা জনপ্রিয় হতে শুরু করে। খাবারটির নতুন নাম দেওয়া হয় ‘বাকসো টাহু গোরেং’ যার সংক্ষিপ্ত নাম ‘বাটাগর’-এর অর্থ বাকসো ও টফু ভাজা।
অধিকাংশ সময় বাটাগর চীনাবাদাম সস সহযোগে পরিবেশন করা হয়। তবে ব্যানেডুং বাটাগর বিক্রেতারা নানাভাবে ব্রথ (ব্রথ হলো বিভিন্ন সবজি, মাংস থেকে তৈরি এক ধরনের স্যুপ) সস সহযোগে পরিবেশন করে। একে ‘বাটাগর কুয়াহ্’ বলে। মসলাদার সুগন্ধ, কুড়মুড়ে বয়ন ও টফুর সঙ্গে মিষ্টি মসলাদার সুগন্ধিযুক্ত চীনাবাদাম সসের জন্য বাটাগর অন্যতম একটি জনপ্রিয় খাবার। আর দামেও বেশ সস্তা। এক প্লেট বাটাগর খেতে খরচ পড়ে এক মার্কিন ডলারের চেয়েও কম। হ
